কেন বার বার লোডশেডিং কী বলছে পিডিবি

শুকলাল দাশ | বৃহস্পতিবার , ৪ এপ্রিল, ২০২৪ at ৫:৫৮ পূর্বাহ্ণ

পবিত্র রমজান মাস। মানুষ একটু স্বস্তিতে থাকতে চায়। কিন্তু তা কী আর সম্ভব হচ্ছে? এমনিতে চৈত্রের তাপদাহ, তার মধ্যে তীব্র লোডশেডিংয়ে মানুষের জীবন কঠিন হয়ে পড়েছে। চট্টগ্রামের মানুষের ভোর শুরু হয় লোডশেডিংয়ের মধ্য দিয়ে। শেষও হয় লোডশেডিংয়ে। গতকাল লাভ লেইন এলাকায় ভোর ৪টা থেকে লোডশেডিং শুরু হয়। ইফতারের আগ পর্যন্ত বিদ্যুৎ গেছে ১২ বার। একবার বিদ্যুৎ গেলে এক থেকে দেড় ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং থাকে। এটা শুধু লাভ লেইনের চিত্র নয়, পুরো চট্টগ্রামের চিত্র। পিডিবি চট্টগ্রাম অঞ্চলের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চট্টগ্রামে চাহিদার বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। চট্টগ্রামে এখন গড়ে বিদ্যুতের চাহিদা সাড়ে ১২শ মেগাওয়াট। বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ২ হাজার মেগাওয়াটের মতো। কিন্তু তারপরও চট্টগ্রামে লোডশেডিং করা হচ্ছে। খবর নিয়ে জানা গেছে, এই রমজানে ইফতার ও সেহেরীর সময় ঢাকায় কোথাও লোডশেডিং নেই। ঢাকায় লোডশেডিং নেই, অথচ চট্টগ্রামে করা হচ্ছে।

চট্টগ্রামের উৎপাদন এবং লোডশেডিংয়ের ব্যাপারে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী অশোক কুমার চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে বলেন, চট্টগ্রামে উৎপাদন ভালো হচ্ছে। বুধবার চট্টগ্রামে ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। দিনে চট্টগ্রামের চাহিদা ছিল ১২৫০ মেগাওয়াট। কিন্তু মাদারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে মদুনাঘাট পর্যন্ত পিজিসিবি জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডের সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ না হওয়ায় এই কেন্দ্রের বিদ্যুৎ মেঘনা ঘাটে চলে যাচ্ছে। চট্টগ্রামে আজ (গতকাল) ভোট ৪টা থেকে ইফতারের আগ পর্যন্ত ২৫০ মেগাওয়াট লোডশেডিং ছিল। তবে ইফতারের পর আর লোডশেডিং ছিল না।

তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী অশোক কুমার চৌধুরী বলেন, মাদারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৮০০ মেগাওয়াট এবং বাঁশখালীতে অবস্থিত এসএস পাওয়ার প্লান্ট থেকে ৪শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। এছাড়াও শিকলবাহা ২২৫ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ২২০ মেগাওয়াট, কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৬০ মেগাওয়াটসহ অন্যান্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র মিলে ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এখন রমজান মাস, ইফতারসেহেরীর সময় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য আমরা সার্বক্ষণিক কাজ করছি।

উল্লেখ্য, পিজিসিবি জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য গ্রিড উপকেন্দ্র ও সঞ্চালন লাইন সমূহের পরিচালন, মেরামত ও সংরক্ষণ এবং সম্প্রসারণ কাজে নিয়োজিত বিদ্যুৎ বিভাগের একমাত্র প্রতিষ্ঠান। চট্টগ্রামের মদুনাঘাট গ্রিড উপকেন্দ্র থেকে ১৩২ কেভি (এক লক্ষ বত্রিশ হাজার ভোল্ট) লাইনের মাধ্যমে পুরো চট্টগ্রামসহ কক্সবাজার এবং তিন পার্বত্য জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে। চট্টগ্রামের সকল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুৎ গ্রিড সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে মদুনাঘাট থেকে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হয়। মাদারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাথে মদুনাঘাট গ্রিড উপকেন্দ্রে সংযোগ স্থাপিত হয়নি। কাজ শেষ হতে আরো সময় লাগবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধথানচিতে রাস্তাঘাট ফাঁকা, বন্ধ দোকানপাট
পরবর্তী নিবন্ধঈদযাত্রার প্রথমদিনে ট্রেনে ছিল না ভিড়