কেনা হচ্ছে ৩০টি মিটারগেজ ইঞ্জিন ব্যয় হবে দেড় হাজার কোটি টাকা

দোহাজারী-পাহাড়তলী ডুয়েলগেজ প্রকল্প বিশেষ কমিটি গঠন, ১৫ দিনের মধ্যে যাচাই-বাছাইয়ের প্রতিবেদন

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১৫ আগস্ট, ২০২৫ at ১০:০১ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ রেলওয়ের ‘চট্টগ্রামদোহাজারী মিটারগেজ রেলপথকে ডুয়েলগেজ রেলপথে রূপান্তর’ প্রকল্পের আওতায় কেনা হচ্ছে ৩০টি মিটারগেজ লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন)। দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই রোটেম কোম্পানী থেকে কেনা হবে মিটারগেজ ইঞ্জিনগুলো। এতে ব্যয় হবে দেড় হাজার কোটি টাকা। এই ইঞ্জিনগুলোর কারিগরি দিক, বৈদ্যুতিক ক্ষমতা ও পরিচালনার সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত রোববার রেল মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, কমিটিকে ১৫ দিনের মধ্যে যাচাইবাছাইয়ের প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।

চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে পাহাড়তলী পর্যন্ত ৪৪ কি.মি. মিটারগেজ (এমজি) রেলপথকে ডুয়েলগেজে উন্নীতকরণ প্রকল্পের অধীনে দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই রোটেম কোম্পানী থেকে এই ৩০টি মিটারগেজ ইঞ্জিন কেনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য ৩০টি মিটারগেজ লোকোমোটিভ ক্রয়ের প্রস্তুতি করা খসড়া স্পেসিফিকেশন যাচাইবাছাইয়ের জন্য রেলপথ মন্ত্রণালয় একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

দোহাজারী থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ ও ৩০টি মিটারগেজ ইঞ্জিন ক্রয়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে কালুরঘাট নতুন সেতু নির্মাণ প্রকল্পের ফোকালপার্সন প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা বলেন, দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০১ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের পর ঢাকাচট্টগ্রামকক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। সারাদেশের মানুষ এখন ট্রেনে করে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে আসাযাওয়া করছে। ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন চলাচলের সুফল পেতে দোহাজারী থেকে চট্টগ্রামে পাহাড়তলী পর্যন্ত ৪৪ কিলোমিটার মিটারগেজ (এমজি) রেললাইনকে ডুয়েলগেজে উন্নীতকরণ করা হচ্ছে। এতে ব্যয় হবে ১০ হাজার ৭৯৭ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের মধ্যে ৪৪ কিলোমিটার রেল ট্র্যাক নির্মাণে অর্থায়ন করবে এডিবি। অপরদিকে দেড়হাজার কোটি টাকায় ৩০টি মিটারগেজ (লোকোমোটিভ) ক্রয়ে অর্থায়ন করবে দক্ষিণ কোরিয়া। এই দুটি মিলে একটি প্রকল্প (এডিবি এবং দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থায়নে দুটি মিলে) হবে।

দেড় হাজার কোটি টাকায় দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই রোটেম কোম্পানী থেকে ৩০টি মিটারগেজ ইঞ্জিন ক্রয় করা হবে। এটা ফাইনাল স্ট্রেজে আছে। রেল লাইন নির্মাণের অর্থায়নের বিষয়টি এডিবির সাথে চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। এখনো লোন এগ্রিমেন্ট হয়নি। তাড়া অর্থায়নে আগ্রহী হয়েছে। খুব শীঘ্রই লোন এগ্রিমেন্ট হবে বলে জানা গেছে।

এদিকে গত ১০ আগস্ট রোববার রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করিম সিদ্দিকী এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান বাংলাদেশ রেলওয়ের ‘চট্টগ্রামদোহাজারী মিটারগেজ রেলপথকে ডুয়েলগেজ রেলপথে রূপান্তর’ প্রকল্পের আওতায় ৩০টি মিটারগেজ লোকোমোটিভ ক্রয় কার্যক্রম চলছে। এ উদ্দেশ্যে রেলওয়ে খসড়া স্পেসিফিকেশন প্রস্তুত করেছে। সমপ্রতি এই স্পেসিফিকেশন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা নেতিবাচক আলোচনা হয়, যা রেলপথ মন্ত্রণালয়ের নজরে আসে।

সেটার পরিপ্রেক্ষিতে উন্মুক্ত ও প্রতিযোগিতামূলক টেন্ডার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার লক্ষ্যে খসড়া স্পেসিফিকেশন যাচাইবাছাইপূর্বক একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এদিকে কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা) . শেখ মইনউদ্দিন। একইসঙ্গে সদস্য সচিব করা হয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালককে (রোলিং স্টক)

কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেনবাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্রকৌশল বিভাগের একজন অধ্যাপক। প্রয়োজনে কমিটি অতিরিক্ত সদস্য কোঅপ্ট করতে পারবে।

এদিকে কমিটি প্রস্তুতকৃত খসড়া স্পেসিফিকেশন যাচাইয়ের সময় লোকোমোটিভ ও সংশ্লিষ্ট যন্ত্রাংশের কর্মক্ষমতা, আধুনিক প্রযুক্তি, জ্বালানি দক্ষতা, খুচরা যন্ত্রাংশের সহজলভ্যতা, আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা এবং বাংলাদেশের পরিবেশে উপযোগিতা ইত্যাদি বিবেচনায় নেবে।

এছাড়াও গঠিত কমিটি আগামী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে বলেও জানানো হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধলুটের পাথর এক সপ্তাহের মধ্যে উদ্ধারের নির্দেশ
পরবর্তী নিবন্ধফরিদাপাড়ায় আধিপত্য নিয়ে সংঘর্ষে তিনজন গুলিবিদ্ধ