মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ‘অনৈতিক সুবিধা পেতে’ অনেক অভিভাবক শিক্ষামন্ত্রীর মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়েছিলেন। মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল নিজেই এ তথ্য সামনে এনে বলেছেন, অভিভাবকদের এ ধরনের মানসিকতা ‘দুর্ভাগ্যজনক’।
গতকাল বৃহস্পতিবার সারাদেশে একযোগে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আগের ঘোষণা অনুযায়ী এদিন কেন্দ্র পরিদর্শনে না গিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ব্রিফিংয়ে আসেন শিক্ষামন্ত্রী। অভিভাবকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তারা যেন প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে নৈতিক অবস্থানে আপস না করেন। খবর বিডিনিউজের।
প্রশ্ন ফাঁসের চ্যালেঞ্জের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে মন্ত্রী গত ১০ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে অনুষ্ঠিত এমবিবিএস পরীক্ষার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, এ বছর আমি মোবাইলে অনেক মেসেজ পেয়েছি। কারো সন্তান পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে, কিছু কি করা যাবে? এমন কি রোল নম্বরও দিয়েছে। আমাদের নৈতিকতা কোথায় গিয়ে ঠেকেছে? যেখানে মন্ত্রী পর্যায়ে মেসেজ করে বলা হচ্ছে–সন্তানের রোল নম্বর এত, সে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছে। আপনি কি কিছু করতে পারেন কিনা? এগুলো লজ্জাজনক বিষয় আমাদের জন্য। এমন নৈতিক অধঃপতন যদি অভিভাবক পর্যায়ে হয়, তাহলে আমরা সন্তানদের কী শিখাব?
এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, একটা গোষ্ঠী পরীক্ষার সময় সরকারের দক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ করতে রাজনৈতিক মানসিকতা থেকে অপপ্রচার করে। আরেকটি গোষ্ঠী প্রতারণা করে, প্রশ্ন ফাঁসের প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আদায় করে। অথচ প্রশ্ন ফাঁস হয়নি। এটা যে কোনো সময় হতে পারে। আমরা সজাগ দৃষ্টি রাখছি। আমরা বলছি না যে, কেউ করবে না। কিন্তু করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
সারাদেশের ৩ হাজার ৭০০ কেন্দ্রে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় একযোগে মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। ১১ শিক্ষাবোর্ডের ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন পরীক্ষার্থী এবার পরীক্ষা দিচ্ছে। কোভিড মহামারী এসএসসি পরীক্ষার সূচি এলোমেলো করে দিয়েছিল। তিন বছর পর মাধ্যমিক পরীক্ষা আবার ফেব্রুয়ারিতে ফিরল।
নতুন শিক্ষাক্রমে পরীক্ষার সময়ে পরিবর্তন আসতে পারে : সাধারণত সকাল ১০টা থেকে পাবলিক পরীক্ষাগুলো শুরু হয়। অফিস শুরুর সময়ে পরীক্ষা শুরু হওয়ায় শিক্ষার্থীদের রাস্তায় চাপে পড়ার বাস্তবতা তুলে ধরে এই সময়সূচি পরিবর্তন করা যায় কিনা তা মন্ত্রীর কাছে জানতে চান একজন সাংবাদিক। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সময়ের বিষয়ে এবার পরীক্ষা শুরুর আগে আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু দুপুরের নামাজ ও মধাহ্ন বিরতির বিষয়গুলোর কারণে পরীক্ষার সময় আগের মতই রাখা হয়েছে। তবে নতুন কারিকুলামে যখন এসএসসি পরীক্ষা হবে, তখন যে পদ্ধতিতে হবে; সেখানে ‘কিছুটা পরিবর্তন সম্ভব হবে’ বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। শিক্ষার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে পারে, সেজন্য অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান শিক্ষামন্ত্রী।