তুমুল গণ আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার পতনের পর সারাদেশে অস্থিরতা ও সহিংসতার মধ্যে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বিদ্রোহের সময় দেয়াল টপকে ২০৯ বন্দি পালিয়ে গেছেন। এ সময় নিরাপত্তা কর্মীদের গুলিতে ছয়জন নিহত হয়েছেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। গতকাল বুধবার বিকালে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা বলেন, মঙ্গলবার বিকালে কারা অভ্যন্তরে বিদ্রোহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দেয়াল টপকে বন্দিদের মধ্যে ২০৯ জন পালিয়ে গেছেন। এ সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জনের মৃত্যু হয়। খবর বিডিনিউজের।
নিহতরা হলেন– নওগাঁর মান্দা উপজেলার কাঞ্চনপুর এলাকার আব্দুল সালাম সরদারের ছেলে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসলাম হোসেন (২৭), জয়পুরহাটের রইস উদ্দিনের ছেলে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আফজাল হোসেন (২৭), মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ থানার রামেশ্বরপুর এলাকার মো. মকবুল মিয়ার ছেলে ইমতিয়াজ (২৭), মৃত সীতারামের ছেলে রাধে শ্যাম (৬৭), টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার স্বপন শেখ (৪৫) এবং জাকির হোসেনের ছেলে জিন্নাহ (২৯)। তারা সবাই কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে বন্দি ছিলেন।
সিনিয়র জেল সুপার বলেন, মঙ্গলবার বিকালে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে থাকা বন্দিরা বিদ্রোহ করে। বিদ্রোহের সময় বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা তাদের ওপর চড়াও হয়। বন্দিরা দেয়াল ভেঙে, দেয়াল টপকে, দেয়ালের সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে পালিয়ে যেতে চায়। এক পর্যায়ে সেনাবাহিনীকে খবর দেওয়া হয়। সেনাবাহিনী কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করে। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসক মো. মোস্তাক আহমেদ বলেন, কাশিমপুর কারা হাসপাতালের মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট আব্দুর রহিম বুধবার ভোরে একটি গাড়িতে বহন করে লাশগুলো আমাদের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। পরে স্বজনদের ও হেফাজতে ইসলামের নেতাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে লাশ সন্ধ্যায় হস্তান্তর করা হয়েছে।