কালুরঘাট ফেরি সার্ভিসের টোল অফিসে হামলার চেষ্টা চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় টোল অফিসের এক কর্মকর্তাকে টেনে হেঁচড়ে বাইরে নিয়ে এসে দুটির জায়গায় একটি ফেরি কেন, তার কৈফিয়ত চায় জনতা। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সেতুর পশ্চিম পাড়ের টোল ও নিয়ন্ত্রণ অফিসে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, জরাজীর্ণ কালুরঘাট সেতুর সংস্কার কাজের জন্য গত ১ আগস্ট থেকে ফেরি সার্ভিস চালু করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে শুরু থেকেই পারাপারে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন যাতায়াতকারীরা। স্থানীয় গোমদন্ডী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক বিষু কুমার বড়ুয়া বলেন, চাকরি, ব্যবসা–বাণিজ্য বা নানা কারণে আমার মতো হাজার হাজার নারী–পুরুষকে প্রতিদিন এই ফেরি দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু ফেরি কর্তৃপক্ষের অনিয়ম ও রহস্যজনক ভূমিকার কারণে যাতায়াতকারীরা কষ্ট পাচ্ছেন। তিনটা ফেরির মধ্যে প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কমপক্ষে দুইটা ফেরি নিয়মিত চলাচলের কথা থাকলেও তা মানা হয় না।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্যার আশুতোষ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ড. পার্থ প্রতীম ধর বলেন, সকালে কলেজে যাওয়ার জন্য ফেরিঘাটে এসে দেখি ঘাটে অপেক্ষমাণ শত শত যাত্রীর দীর্ঘ লাইন। ফেরি একটা। এ সময় জনতার সাথে ফেরির লোকজন বাকবিতণ্ডায় জড়ান। প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ জনতা টোল অফিসে হামলা চালাতে চেষ্টা করে। একটা ফেরির কারণে মানুষের কষ্ট হচ্ছে বলে জানান তিনি।
বিপ্লব সরকার নামে এক যাত্রী অভিযোগ করেন, ফেরির লোকদের সাথে নৌকার মাঝিদের অলিখিত বোঝাপড়া গড়ে উঠেছে বলে খবর পেয়েছি। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে মানুষকে জিম্মি করে নৌকায় পারাপারে বাধ্য করে।
আরেফা খানম নামে এক যাত্রী বলেন, ফেরিঘাট এলাকায় কোনো ট্রাফিক ব্যবস্থা না থাকায় যানবাহন ওঠানামায় শৃঙ্খলা নেই। এতে যানজটের ভোগান্তিতে পড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়।
বোয়ালখালী উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বলেন, পারাপারে মানুষের ভোগান্তির অভিযোগ পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের দুটি ফেরি নিয়মিত চালানোর কথা বলেছি। তারা আমাকে কথা দিলেও পরে একই অভিযোগ শুনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুন বলেন, অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি তদন্ত করে দেখেছি। ফেরি কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছে, কিছু টেকনিক্যাল কারণ ছাড়া প্রতিদিন রাত ২টা পর্যন্ত ফেরি চালু রাখে তারা। যাত্রীদের অভিযোগের বিষয়ে প্রমাণ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এখানে দুটি ফেরি চলাচল করে। যান্ত্রিক ত্রুটি ও চালক সংকটের কারণে মাঝেমধ্যে সমস্যা হয়। শীঘ্রই এর সমাধান হবে।