কারাবন্দি ছেলেকে দেখতে যাওয়ার পথে রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার সড়কে ঝরে গেল এক পরিবারের পাঁচ সদস্যের প্রাণ; তাদের অটোরিকশার চালকও বাঁচলেন না। গতকাল বুধবার সকালে উপজেলার চাঁদপুর রেলগেইট এলাকায় রাজবাড়ী–কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে কালুখালী থানার ওসি নাজমুল হাসান জানান। খবর বিডিনিউজের।
নিহতরা হলেন পাংশা উপজেলার পাট্রা ইউনিয়নের পুঁইজোর গ্রামের মোতালেব মণ্ডলের স্ত্রী মসিরন বিবি (৬০), তার বড় মেয়ে মরিয়ম (৪০), ছোট মেয়ে শিলা (২৫), শিলার বড় ছেলে নয়ন মিয়া (৮) ও ছোট ছেলে ইউসুফ আলী (৫) এবং অটোরিকশাচালক একই গ্রামের বাছির মিয়ার ছেলে নাসির (৩২)। আহত হয়েছেন মোতালেব মণ্ডলের পরিবারের সদস্য আহমেদ মণ্ডল ও মরজিনা আক্তার; তাদের অবস্থাও ভালো নয়।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান নিহতদের প্রতিবেশী মো. নুরুজ্জামান শীতল। তিনি বলেন, মোতালেব মণ্ডলের ছেলে ইসলাম মণ্ডল একটি মামলায় রাজবাড়ীর কারাগারে বন্দি আছেন। বুধবার তার আদালতে হাজিরার তারিখ ছিল। ইসলামের সঙ্গে দেখা করতে পুঁইজোর গ্রাম থেকে একটি অটোরিকশায় করে পরিবারের আটজন রাজবাড়ী আদালতে যাচ্ছিল। পথে তারা দুর্ঘটনার শিকার হয়। দুর্ঘটনার খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে আসি। দেখি তিনজনের মরদেহ পড়ে আছে। বাকিদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
শীতল জানান, আহত আহমেদ মণ্ডল ও মরজিনা আক্তারকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছিল। মরজিনার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় দুপুরে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী হাসান শেখ বলেন, দুঘটনার সময় বৃষ্টি হচ্ছিল। আমি বাড়িতে ছিলাম। হঠাৎ একটা শব্দ শুনে বাইরে এসে দেখি দুর্ঘটনা ঘটেছে। রাস্তার পাশে কয়েকজন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। তাৎক্ষণিক কিছু দূরে থাকা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের জানাই। তারা এসে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
পাংশা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ওসি লিয়াকত আলী বলেন, পুলিশ এরই মধ্যে ছয়জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে। ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ট্রাকটি জব্দ করা হলেও চালক ও তার সহকারী পালিয়ে গেছেন। তাদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ।