রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় টানা খরা চলছে। বৃষ্টি না হওয়ায় কাপ্তাই লেকে পানির স্তর দিন দিন কমছে। লেকে পানি কম থাকায় কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনও কমে যাচ্ছে।
সুত্র জানায় কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিটের মোট উৎপাদন ক্ষমতা ২৪০ মেগাওয়াট। কাপ্তাই লেকে ৯০ ফুট এসএমএলের উপর পানি থাকলে এবং সবগুলো জেনারেটর একযোগে চালানো সম্ভব হলে এই কেন্দ্র থেকে ২৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। বর্তমানে ১ নম্বর ইউনিটটি চালু আছে। এই ইউনিট থেকে ২৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে। ২ নম্বর জেনারেটরটি রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য বর্তমানে বন্ধ রাখা হয়েছে। স্বাভাবিকের চেয়ে লেকে পানি কম থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম থাকা সত্ত্বেও ৩, ৪ ও ৫ নম্বর জেনারেটর চালানো সম্ভব হচ্ছে না।
চট্টগ্রামে বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে সাড়ে ১৩শ’ মেগাওয়াটের মতো। চট্টগ্রামে সরকারি-বেসরকারি মিলে ২১টি ছোট-বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে চাহিদার বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় বলে জানান পিডিবি চট্টগ্রাম আঞ্চলের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা। বর্তমানে চট্টগ্রামে বিদ্যুতের কোনো লোডশেডিং নেই। কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন খরচ প্রতি ইউনিট মাত্র ২৫ পয়সা। উৎপাদন ক্ষমতা কম হওয়ায় বেসরকারি খাতে তেল নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্রেগুলো বন্ধ রেখে সব সময় কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইউনিটগুলো চালু রাখা হয়। কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দায়িত্বশীল একটি সূত্র গতকাল রাত সাড়ে ৮টার সময় আজাদীকে জানায়, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের রুলকার্ভ (পানির পরিমাপ) অনুযায়ী বর্তমানে কাপ্তাই লেকে পানি রয়েছে ৭৫.১২ ফুট মীন সী লেভেল (এমএসএল)। কিন্তু রুলকার্ভ অনুযায়ী লেকে এই মুহূর্তে পানি থাকার কথা ৭৯ ফুট এমএসএল। প্রয়োজনের তুলনায় কাপ্তাই লেকে বর্তমানে ৪ ফুট পানি কম রয়েছে। লেকে পানি কম থাকায় কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনও কমিয়ে আনা হয়েছে।
কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী এটিএম আব্দুজ্জাহের কাপ্তাই লেকে পানি কম থাকার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও লেকে পানি কম থাকায় সব জেনারেটর সচল রেখে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো যাচ্ছে না। অচিরেই ভারি বৃষ্টি হবার আশা প্রকাশ করে ব্যবস্থাপক বলেন, বৃষ্টি হলে কাপ্তাই লেকে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে। তখন বিদ্যুৎ উৎপাদনও বাড়ানো সম্ভব হবে।