কাপ্তাইয়ে হাতি আতঙ্ক

কাপ্তাই প্রতিনিধি | শনিবার , ১৮ অক্টোবর, ২০২৫ at ৭:৪০ পূর্বাহ্ণ

কাপ্তাই উপজেলার বিভিন্ন লোকালয়ে হাতি আতঙ্ক বিরাজ করছে। প্রায় প্রতিদিনই বন্য হাতির দল খাবারের খোঁজে লোকালয়ে চলে আসছে। এর ফলে পাহাড়ি এলাকায় বসবাসকারী মানুষদের সারাক্ষণ হাতি আতঙ্কে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে। আগে বন্য হাতির দল কাপ্তাই নৌবাহিনী এলাকা, সেনাবাহিনী এলাকা, ফরেস্ট কলোনি, জীবতলী, চেয়ারম্যান পাড়া এসব এলাকায় বিচরণ করতো। তবে কিছুদিন ধরে বন্য হাতির দল ওয়াগ্‌গাছড়া চা বাগান, চিৎমরম, উজানছড়ি, সীতারঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে বিচরণ করতে দেখা যায়। বন বিভাগ বলছে, হাতি নয় মূলত মানুষই হাতির আবাসস্থলে বিচরণ করে বেড়াচ্ছে। সীমিত হয়ে আসা বন জঙ্গলে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্যের যোগান না থাকায় হাতির পাল পাহাড়ি লোকালয়ে নেমে আসছে।

স্থানীয়রা জানান, আগে বন্য হাতি সাধারণত রাতে লোকালয়ে আসত। কিন্তু এখন দিনের আলোয় বন্য হাতির দল লোকালয়ে বিচরণ করে বেড়ায়। বিশেষ করে কর্ণফুলী নদীর তীরে দলে দলে বন্য হাতিদের দেখা যায়। হাতির দল কখনো নদীর পানিতে দাপাদাপি করে। আবার কখনো কখনো নদীর পাড়ে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অবস্থান করে।

ওয়াগ্‌গাছড়া চা বাগানের পরিচালক মোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, আমাদের বাগানে প্রায় সময় হাতির পাল নেমে আসে। তখন চা শ্রমিকেরা বাগানে কাজ করতে পারে না। মাঝে মধ্যে বন বিভাগকে খবর দিলে তারা প্রশিক্ষিত টিম নিয়ে এসে হাতির দলকে তাড়িয়ে গভীর বনের দিকে নিয়ে যায়। কিন্তু ২/১ দিন পর আবার হাতির দল চা বাগানে নেমে আসে।

লোকালয়ে বন্য হাতির দল বিচরণের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ কর্মকর্তা ওমর ফারুক স্বাধীন। তিনি বলেন, বনে হাতি বিচরণের মতো বন জঙ্গল নাই। সবখানেই মানুষের চলাচল। একটি হাতি দৈনিক যে পরিমাণ খাবার খায় তা এখন বন জঙ্গলে পাওয়া যায় না। তাই অনেকটা খাবারের সন্ধানেই বন্য হাতির দল লোকালয়ে চলে আসে।

এই রেঞ্জ কর্মকর্তা বলেন, কাপ্তাই উপজেলার যেসব এলাকায় এখন মানুষ বসবাস করছেন; সেসব এলাকা একসময় বন্য হাতির আবাসস্থল ছিল। সত্যিকার অর্থে বন্য হাতি কিন্তু লোকালয়ে আসছে না। বরং হাতির আবাসস্থলেই মানুষ বিচরণ করে বেড়াচ্ছে। তবে বন বিভাগের পক্ষ থেকে গভীর জঙ্গলে হাতির খাবার উপযোগী বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন গাছপালা ও লতাগুল্ম লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। সেটা করা গেলে হাতির দল হয়তো লোকালয়ে বিচরণ কম করবে বলেও মন্তব্য করেন বন কর্মকর্তা ওমর ফারুক স্বাধীন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধলায়ন্স ক্লাব অব চিটাগাং মহানগরের চক্ষু পরীক্ষা, রক্তের গ্রুপ নির্ণয়
পরবর্তী নিবন্ধপুতুলী চাকমা