কক্সবাজার সদরের ঝিংলজা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন শেষে কাউন্সিল স্থগিত ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। এর ফলে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত দেড় ঘণ্টা ধরে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানান, গতকাল স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সদর ঝিংলজা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিলের আয়োজন করা হয়। সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন বিকেল ৩টার দিকে শুরু হয়ে ৫টায় শেষ হয়। মাগরিবের পর দ্বিতীয় অধিবেশন বা কাউন্সিল শুরু হলে এক পক্ষ ইলেকশনের মাধ্যমে সরাসরি ভোটে, আরেক পক্ষ সিলেকশনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু সিলেকশনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের এক পক্ষের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে অপর পক্ষ কাউন্সিলর তালিকায় ভুয়া ভোটার অন্তর্ভুক্তির অভিযোগ তোলে। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান কাউন্সিল স্থগিত ঘোষণা করলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। এক পর্যায়ে তারা চট্টগ্রাম-কঙবাজার মহাসড়কের পাওয়ার হাউস হাজিপাড়া এলাকায় সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানান। তারা সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেন। এতে দূরপাল্লার বাসসহ শত শত যানবাহন আটকে পড়ে। যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। এ সময় ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন স্লোগান দেন। পরে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কাইছারুল হক জুয়েলের অনুরোধে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করেন বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা।
ঝিলংজা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সরওয়ার আলম বলেন, সম্মেলন ও কাউন্সিল নিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সর্বশেষ বর্ধিত সভায় সবার সম্মতিক্রমে কাউন্সিলর তালিকা অনুমোদিত হয়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে এক প্রার্থী তালিকা নিয়ে অভিযোগ তোলেন। এতে অন্যান্য প্রার্থী, নেতাকর্মী ও কাউন্সিলররা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। তিনি বলেন, প্রথম অধিবেশন শেষে হঠাৎ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যালটগুলো পকেটে নিয়ে চলে যান।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জসিম উদ্দীন বলেন, মিজানুর রহমান হেলাল নামের এক প্রার্থীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে কাউন্সিল স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। অভিযোগটি সুরাহা করে পুনরায় কাউন্সিল আয়োজনের কথাও জানিয়েছেন জেলা নেতৃবৃন্দ।
তবে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক স্থানীয় চেয়ারম্যান টিপু সুলতান বলেন, এটি মূলত জামায়াত-শিবিরের ঘাঁটি। দীর্ঘদিন পরিশ্রম করে আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করেছি বলে নৌকা প্রতীকে ২ বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। অনেক বছর পর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন এবং কাউন্সিলের ঘোষণা হওয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছিল। সকাল থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী এসেছিল সমাবেশস্থলে। প্রথম অধিবেশন শেষে হঠাৎ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যালট নিয়ে চলে যান। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিব তার সম্বন্ধীকে নেতা বানাতে এমন আচরণ করেছেন বলে দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে কঙবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনে বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
কঙবাজার সদর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরানো হয়েছে।