সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ইরফান সেলিমের বাসার শোয়ার ঘরের খাটের জাজিমের নিচ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করেছে র্যাবের আভিযানিক দল। অভিযানে আরো পাওয়া গেছে মদ, বিয়ার ও ওয়াকিটকি। সোমবার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে অভিযানের এক পর্যায়ে হাজী সেলিমের চাঁন সরদার দাদার বাড়ির ভিতরে সাংবাদিকদের নিয়ে গেলে উদ্ধার এসব অস্ত্র-মাদক দেখা যায়।
অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করলে ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানিয়েছেন বাইরে বাড়িটি ঘিরে রাখা র্যাব কর্মকর্তারা। এর আগে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ইরফান সেলিম ও তার দেহরক্ষী জাহিদকে সাময়িকভাবে র্যাব হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ।-বাংলানিউজ
তিনি বলেন, কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ইরফান সেলিমের বাসায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। ‘গতকালের ঘটনা নয়, মোহাম্মদ ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগের তথ্য পাওয়া গেছে। ভেতরে র্যাবের অভিযকনিক দল কাজ করছেন। এই বাড়িটি র্যাব ঘিরে রেখেছে। এখানে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, র্যাবের গোয়েন্দা ইউনিট, র্যাব-৩ ও ১০ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা রয়েছেন। ’
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা মোহাম্মদ ইরফান সেলিম ও তার দেহরক্ষী জাহিদকে র্যাব হেফাজতে নিয়েছি। তাদের এখনও গ্রেফতার দেখানো হয়নি। সাধারণত কোনো বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করার সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সঙ্গে রাখতে হয়। সে কারণে আমাদের ম্যাজিস্ট্রেটও উপস্থিত রয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট র্যাবের অভিযানে সহযোগিতা করেন।
সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে র্যাবের একটি দল হাজী সেলিমের ছেলেকে গ্রেফতার করতে তার বাসা চাঁন সরদার দাদার বাড়িতে তল্লাশি শুরু করে।
এর আগে সোমবার (২৬ অক্টোবর) ভোরে ধানমন্ডিতে নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় ভুক্তভোগী কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিম নিজেই বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ইরফান সেলিমসহ চারজনের নামে মামলা দায়ের করেন। মামলার পরপরই গাড়িচালককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ইরফানের গাড়ি ওয়াসিমকে ধাক্কা মারার পর নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিম সড়কের পাশে মোটরসাইকেলটি থামান এবং গাড়ির সামনে দাঁড়ান। নিজের পরিচয় দেন। তখন গাড়ি থেকে আসামিরা একসঙ্গে বলতে থাকেন, ‘তোর নৌবাহিনী/সেনাবাহিনী বের করতেছি, তোর লেফটেন্যান্ট/ক্যাপ্টেন বের করতেছি। তোকে এখনই মেরে ফেলবো’। এরপর বের হয়ে ওয়াসিমকে কিল-ঘুষি মারেন এবং তার স্ত্রীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। তারা মারধর করে ওয়াসিমকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যান। তার স্ত্রী, স্থানীয় জনতা এবং পাশে ডিউটিরত ধানমন্ডির ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা তাকে উদ্ধার করে আনোয়ার খান মডেল হাসপাতালে নিয়ে যান।