কর্ণফুলী ও ইছামতী নদীর তীর সংরক্ষণ, প্রতিরক্ষা বাঁধ ও ড্রেজিং প্রকল্পে ২০১৮ সালে ৩৯৬ কোটি ৯ লাখ ৭৭ হাজার টাকা প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। সেই প্রকল্প থেকে প্রায় ৯৭ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। মূলত ইছামতি নদীর ড্রেজিং করতে না পারায় এই টাকা বেচে যায়। এখন সেই সাশ্রয়ী টাকাসহ ১৩৫ কোটি টাকা দিয়ে রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালী অংশে নদী ভাঙনরোধে নতুন প্রকল্প নিচ্ছে পাউবো।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (রাঙামাটি বিভাগ) তয়ন কুমার ত্রিপুরা বলেন, ইছামতি নদী ড্রেজিং করতে না পারা ও প্রতিরক্ষা কাজ থেকে প্রায় ৯৭ কোটি ৭ লাখ সাশ্রয় হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের নির্দেশনায় সাশ্রয়ী টাকাসহ ১৩৫ কোটি টাকা দিয়ে নতুন প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। ২০১৮ সালের ৯ অক্টোবর একনেক সভায় অনুমোদন হয় প্রকল্পটি। নভেম্বরে জিও (গর্ভমেন্ট অর্ডার) অনুমোদনের পর টেন্ডার আহ্বান করা হয়। ২০১৮ সালে কর্ণফুলী নদীর তীর সংরক্ষণ, প্রতিরক্ষা বাঁধ ও ড্রেজিং প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ইতোমধ্যেই তীর সংরক্ষণ–বাঁধের কাজ শেষ। কর্ণফুলী নদী ড্রেজিং কাজও শেষের পথে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, কর্ণফুলী ও ইছামতি নদীর তীর সংরক্ষণ ও প্রতিরক্ষা বাঁধ এবং ড্রেজিং কাজের তিনশ ৯৬ কোটি ৯ লাখ ৭৭ হাজার টাকার প্রকল্প নেয়া হয়। এরমধ্যে নদী ড্রেজিং প্রকল্পের বরাদ্দ দুইশ কোটি ১০ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। প্রকল্পে কর্ণফুলী ও ইছামতি নদীর ১৬ কিলোমিটার এলাকা ড্রেজিং করার কথা ছিল। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের নকশা প্রণয়নের ভুলে ইছামতি নদী ড্রেজিং অংশ বাদ দেওয়া হয়েছে। শুধু কর্ণফুলী নদীর রাঙ্গুনিয়ার চন্দ্রঘোনা ফেরিঘাট থেকে নাজিরচর এলাকা পর্যন্ত ড্রেজিং করা হয়।
পাউবো সূত্র জানায়, ইছামতি নদীর তীরে পাউবোর প্রতিরক্ষা বাঁধ, লেগুলেটর, সওজের সেতু, বিআরডিসির রাবার ড্যাম রয়েছে। এসব স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় ইছামতি নদীর ড্রেজিং প্রকল্প বাতিল করা হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নথি বলছে, কর্ণফুলী নদীর উভয় তীরে সাত কিলোমিটার অংশে ভাঙনরোধে প্রতিরক্ষার কাজ হয়। ইছামতি নদীর উভয় তীরে তিন কিলোমিটার প্রতিরক্ষার কাজ হয়। শিলক ও বিভিন্ন শাখা খালের আড়াই কিলোমিটার প্রতিরক্ষার কাজ হয়। কর্ণফুলী নদীর ১০ কিলোমিটার ড্রেজিং করা হয়। ইছামতি নদীর ৬ কিলোমিটার ড্রেজিং করার কথা ছিল। এসব প্রকল্পে ৯৭ কোটি ৭ লাখ ৩৯ হাজার টাকা সাশ্রয় হয়। সাশ্রয় হওয়া টাকায় রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালী অংশে ভাঙনরোধে নতুন প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে বলে জানান নির্বাহী প্রকৌশলী। এজন্য ১৩৫ কোটি টাকার নতুন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
যেসব এলাকায় হচ্ছে নতুন প্রকল্প : পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, কর্ণফুলী নদীর রাঙ্গুনিয়ার মিরাজপাড়া, গোলাম বেপারির হাট, গুনগুনিয়া বেতাগী, বেতাগী কাউখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাচা বাবার মাজার সংলগ্ন জেলেপাড়া, বেতাগী কাউখালী, ধোপাঘাট ডংখাল, মুসলিমপাড়া, সরফভাটা, জুটমিল এলাকা। আর বোয়ালখালীর ভান্ডালজুড়ি ঘাট থেকে বড়ুয়া পাড়া, জ্যৈষ্ঠপুরা ফতেয়ারখীল, শ্রীপুর বসাকপাড়া, ভান্ডালজুড়ি ব্রিজ থেকে হাটখোলা। ইছামতি নদীর খীলমোগল, মনু বৈদ্যবাড়ি, গোয়াছপাড়া, সোনাইছড়ি বড়ুয়াপাড়া, সোনাইছড়ি মাতৃমন্দির এলাকা। রাঙ্গুনিয়ার শিলক খালের পদুয়া থেকে সাতবাড়িয়া, মরিয়মনগর, কাউখালী খাল, শিলক চেয়ারম্যান বাড়ি, সুখবিলাস গরুঘাটা, বামছড়া এলাকা।