কর্ণফুলী উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে এখন সরগরম মাঠ-ঘাট ও চায়ের দোকান। আগামী ২৩ ডিসেম্বর এ উপজেলার ৪ ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ভোটার ও জনসাধারণকে আগাম জানান দিচ্ছেন। তবে ভোটের মাঠে শুধু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতাদেরই বেশি দেখা যাচ্ছে।
অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা অনেকটা নীরব। চেয়ারম্যান পদে ৪টি ইউনিয়ন থেকে মনোনয়ন পেতে সরকার দলীয় ২০ জন প্রার্থী ব্যাপক লবিং-তবদির চালিয়ে যাচ্ছেন। এলাকার গন্ডি ছেড়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের ব্যানার ও ফেস্টুনে ভরে গেছে স্যোশাল মিডিয়াও। উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান, মহিলা মেম্বার ও মেম্বার পদ প্রার্থীদের মাঝেও চলছে আগাম প্রচারণা। দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কাছ থেকে আবেদন গ্রহণ করেছে। যাচাই বাছাই করে দলীয় প্রার্থীদের নাম প্রকাশ করবে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। সূত্রে জানা গেছে, চেয়ারম্যান পদে শিকলবাহা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী হতে পারেন বর্তমান চেয়ারম্যান কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলম (গত বারের বিদ্রোহী), উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এস এম ছালেহ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সেলিম চৌধুরী, শিকলবাহা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম ফোরকান, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেকান্দর হোসেন রানা (প্রয়াত বকুল চেয়ারম্যানের বড় ছেলে)।
চরলক্ষ্যা ইউনিয়ন পরিষদে প্রার্থী হতে পারেন বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী, কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোহাম্মদ সোলায়মান তালুকদার, কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আমজাদ হোসেন, কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নাজিম উদ্দীন হায়দার (গত বারের বিদ্রোহী প্রার্থী)।
জুলধা ইউনিয়ন পরিষদে সম্ভাব্য প্রার্থী হতে পারেন জুলধা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ্ব রফিক আহমদ (গত বারের বিদ্রোহী), কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সাবেক চেয়ারম্যান হাজী মোহাম্মদ নুরুল হক, কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জুলধা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব আমির আহমদ, জুলধা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মো. আলী, উপজেলা যুবলীগের উপ-মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মো. মুসা।
বড়উঠান ইউনিয়নে প্রার্থী হতে পারেন বর্তমান চেয়ারম্যান কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ দিদারুল আলম, উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক হাজী রফিকউল্লাহ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন খাঁন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আহমদ হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য মামুনুর রশিদ, বড়উঠান ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন চৌধুরী।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, কর্ণফুলী উপজেলাধীন চরলক্ষ্যা, জুলধা, বড়উঠান ও শিকলবাহা ইউনিয়নে নির্বাচন হলেও বাদ পড়েছে চরপাথরঘাটা ইউনিয়ন। চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ৫ বছর মেয়াদ শেষ হবে ২০২২ সালের ২০শে ডিসেম্বর। সেই কারণে মূলত নির্বাচন পিছিয়েছে।
বিদ্রোহীদের ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ। এই ব্যাপারে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান আজাদীকে জানান, গতবারের বিদ্রোহীদের কোনো নাম এবার আমরা কেন্দ্রে পাঠায়নি। বিদ্রোহী কেউ এবার মনোনয়ন পাবে না। কেন্দ্র বিদ্রোহীদের ব্যাপারে কঠোর। যদি বিদ্রোহীদের নাম পাঠাতে হয় তাহলে তার নামের পাশে মন্তব্য কলামে বিদ্রোহী লিখে দিতে বলেছেন।
কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ দিদারুল আলম বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্যের নির্দেশ অনুযায়ী দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হবে। আশাকরি মনোনয়নের ক্ষেত্রে যারা দলের দুর্দিনে অবদান রেখেছেন, এমন ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করা হবে।