কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে টানা ১৮ দিনের জমজমাট প্রচার শেষে এখন ভোটের অপেক্ষা। গতকাল সোমবার রাত ১২টায় প্রচার প্রচারণা শেষ হয়েছে।
আজ মঙ্গলবারের রাত পোহালেই কাল সকালে শুরু হবে ভোট গ্রহণ। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ৪২টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল সোমবার আনুষ্ঠানিক প্রচার শেষ হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষ থেকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বহিরাগতদের নির্বাচনী এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যাপ্তসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, কর্ণফুলী উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ১৬ হাজার ৫৭২ জন। উপজেলা গঠনের পর দ্বিতীয়বারের মত আগামীকাল ২ নভেম্বর নির্বাচনে ৪৫টি কেন্দ্রের ৩২০টি বুথে ইভিএমের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে ভোট গ্রহণ। তবে বুথে থাকছে না কোনো সিসি ক্যামরা।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এবারই প্রথম ৪২টি কেন্দ্রের সবকটিতে ইভিএম ব্যবহার করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে মক ভোটিং শেষ করা হয়েছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীকে ভোট হলেও আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য বড় দলের সরাসরি কোনো প্রার্থী নেই। কিন্তু আওয়ামী লীগ দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি পাওয়া ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত ও বর্তমান চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী ও মোহাম্মদ আলী আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছেন।
নির্বাচন নিয়ে নানা উত্তেজনা ও টানাপোড়েন থাকলেও এ পর্যন্ত অপ্রীতিকর কোনো ঘটনার খবর মেলেনি।
নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ২ প্রার্থী, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন ৬ প্রার্থী। তারা হলেন, চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী (নৌকা), বিদ্রোহী মোহাম্মদ আলী (আনারস), ভাইস চেয়ারম্যান পদে জুলধা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যাংকার আমির আহমদ (চশমা), উপজেলা যুবলীগের সহ সভাপতি মো. মহিউদ্দিন মুরাদ (উড়োজাহাজ), মো. আবদুল হালিম (তালা), মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শিকলবাহার সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম বকুলের কন্যা ডাক্তার ফারহানা মমতাজ (ফুটবল), মোমেনা আক্তার (কলস), বানাজা বেগম (হাঁস) এবং রানু আকতার (বৈদ্যুতিক পাখা) মার্কা নিয়ে প্রতিন্দ্বিতা করছেন।
কর্ণফুলী থানার ওসি দুলাল মাহমুদ বলেন, এ পর্যন্ত নির্বাচন নিয়ে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচনে যেকোনো বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে পুলিশ সর্বদা মাঠে রয়েছে। এদিকে প্রার্থীরা যাতে আচরণবিধি লঙ্খন না করতে পারেন, সেদিকে নজরদারি রাখছে প্রশাসন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল শুক্কুর বলেন, এবার ভোটে জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। নির্বাচনে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ৪৫ জন, সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ৩২০ জন এবং পোলিং কর্মকর্তা ৬২০ জন নিয়োজিত করা হয়েছে।
নির্বাচনে নিযুক্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) পিযুষ কুমার চৌধুরী জানিয়েছেন, উপজেলা নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাড়ে ৬০৮ সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। ৩০ টি মোবাইল টিম, ডিবি পুলিশের মোবাইল টিম থাকবে ৫টি, ৫ প্লাটুন বিজিবি, ৪০টি র্যাবের টিম, ৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভোটের মাঠে থাকছেন। জুডিশিয়াল ম্যজিস্ট্রেট থাকবেন ১ জন। যেখানে প্রয়োজন হবে সেখানেই বসানো হবে চেকপোস্ট করা হবে।