কর্ণফুলীতে ডাকাত সন্দেহে দুইজনকে গণধোলাই

চোরাকারবারের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্ব

পটিয়া প্রতিনিধি | সোমবার , ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ৭:৫৭ পূর্বাহ্ণ

কর্ণফুলীতে ডাকাত সন্দেহে দুইজনকে গণধোলাই দেয়া হয়েছে। একটি বাড়িতে ভাঙচুর ও হামলার ঘটনায় ডাকাত সন্দেহে স্থানীয়রা গণধোলাই দেয়। এ ঘটনায় ৯৯৯এ ফোন পেয়ে পুলিশ এসে দুই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে উপজেলার চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মৌলভীবাজার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ভাঙচুর করা বাড়িটি মো. খোরশেদ আলমের বলে জানা যায়।

স্থানীয়রা জানান, খোরশেদ আলম একজন সাম্পান চালক হলেও দীর্ঘদিন ধরে নদীপথে চোরাই তেলসহ অবৈধ ব্যবসায় জড়িত ছিলেন। এসব কাজ পরিচালনার জন্য তিনি আনু মিয়া নামে এক যুবককে নিজের ছেলের মতো বাড়িতে রাখতেন। পরে দু’জনের মধ্যে চোরাকারবারের লভ্যাংশ ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। আনু মিয়া চোরাকারবার থেকে লভ্যাংশ পাওয়ার দাবি করলে খোরশেদ তা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এ নিয়ে কয়েক মাস আগে নগরীর বাংলাবাজার ঘাট এলাকায় আনু মিয়া ও তার সহযোগী সেলিম ধারালো অস্ত্র দিয়ে খোরশেদকে কুপিয়ে আহত করেন। পরে আশপাশের লোকজন খোরশেদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় খোরশেদ আদালতে মামলা দায়ের করলে আনু মিয়া ও সেলিম গ্রেপ্তারের পর জামিনে মুক্ত হন। মামলাটি মীমাংসার জন্য স্থানীয়ভাবে কয়েক দফা বৈঠক হলেও সমাধান হয়নি।

এ ঘটনার জেরে গত শনিবার রাতে পাওনা টাকা ও চোরাকারবারের লভ্যাংশ দাবি করতে আনু মিয়া (৩৫), জানে আলম (৩৪), মো. বাদশা (২৮), সৈকতসহ (৩২) কয়েকজন খোরশেদের বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর চালায়।

এ সময় বাড়ির লোকজন ও স্থানীয়রা তাদের ডাকাত সন্দেহে চিৎকার করলে গ্রামবাসী লাঠিসোঁটা নিয়ে এগিয়ে আসে। এতে গণধোলাইয়ে আহত হন আনু মিয়া ও জানে আলম। অপর অভিযুক্তরা কৌশলে পালিয়ে যান।

পরে বিশেষ পরিসেবা ৯৯৯এ ফোন পেয়ে কর্ণফুলী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আহত দুই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

এ বিষয়ে জানতে বাড়ির মালিক খোরশেদের সাথে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও, তিনি অপরপ্রান্ত থেকে ফোন রিসিভ করেননি।

কর্ণফুলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ শরীফ বলেন, ডাকাতির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত দু’জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, এটি ডাকাতির ঘটনা নয়। টাকা লেনদেন কিংবা চোরাকারবারের লভ্যাংশ নিয়ে বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। তিনি আরো বলেন, ডাকাতির ঘটনা হলে তো বাড়ির ফার্নিচার ভাঙচুর করে দোতলা থেকে নিচে ফেলার কথা নয়। ভাঙচুরের কিছু আলামত পাওয়া গেছে। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আহতদের একজন চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং অন্যজনকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় একটি ছিনতাই মামলা দায়ের করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটেকনাফে জীর্ণ বাড়ি থেকে ৬৯ বোমাসহ আটক ২
পরবর্তী নিবন্ধনওফেল, রেজাউলসহ ১২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা