কর্ণফুলীতে উচ্ছেদ করা জায়গা পুনরায় দখল হচ্ছে

মানববন্ধনে দাবি

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১৭ অক্টোবর, ২০২২ at ৪:৫১ পূর্বাহ্ণ

কর্ণফুলী নদীর তীরে উচ্ছেদকৃত জায়গা কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান নতুন করে দখল করছে বলে একটি মানববন্ধন থেকে দাবি করা হয়েছে। মানববন্ধনে অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স উচ্ছেদকৃত স্থানে নতুন করে রাস্তাঘাট তৈরি করছে। ১৫ দিন ধরে দখল কার্যক্রম চলমান থাকলেও জেলা প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করছে।
গতকাল সকালে কর্ণফুলী নদীর তীরের সদরঘাটে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কর্ণফুলী নদীর উভয় তীরের দুই সহস্রাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করা, নতুন করে কর্ণফুলী দখল বন্ধ করা এবং সদরঘাট সংস্কারের দাবিতে যৌথভাবে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। সংগঠনগুলো হচ্ছে চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলন, বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরাম, সৃষ্টি, কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন এবং ইছানগর সদরঘাট সাম্পান মালিক সমিতি। চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের নির্বাহী সদস্য মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপদেষ্টা অধ্যাপক নোমান সিদ্দিকী, সভাপতি চৌধুরী ফরিদ, সাধারণ সম্পাদক আলীউর রহমান, কর্ণফুলী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশনের সহসভাপতি জাফর আহমদসহ অন্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ২০২০ সালের ৪ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ দিন অভিযান চালিয়ে তিন শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। পরে উচ্ছেদ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এতে প্রায় দুই হাজারের অধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করা থেকে বাদ পড়ে।
জেলা প্রশাসন ও বন্দর কর্তৃপক্ষ নদী তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করলে চট্টগ্রামের সর্বস্তরের জনগণকে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে বলে ঘোষণা দেন চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। এছাড়া হাই কোর্টের আদেশ অনুযায়ী ২ হাজার ১৮১টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন এবং বন্দর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ারও হুমকি দেয়া হয়।
আলীউর রহমান বলেন, ইকো নামের একটি সংগঠনের গবেষণা অনুযায়ী বঙ্গোপসাগরের মোহনা থেকে কাপ্তাই পর্যন্ত কর্ণফুলীর দুই তীরে ৫২৮ প্রজাতির উদ্ভিদ শনাক্ত হয়েছে, যার মধ্যে ৮১ প্রজাতির উদ্ভিদ বিলুপ্তির পথে আছে। দূষণ ঠেকাতে উদ্যোগ না নিলে আরো ৬১ প্রজাতির উদ্ভিদ বিপন্ন হয়ে যাবে। উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী কর্ণফুলীর উভয় তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সেখানে ফলদ, ঔষধি এবং প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট বৃক্ষ জন্মানোর সুযোগ করে দিতে হবে। এতে কর্ণফুলী তীরের বৃক্ষবৈচিত্র্য অক্ষুণ্ন থাকবে। অন্যথায় আগামী কয়েক বছরের মধ্যে কর্ণফুলী তীরে আর একটি গাছও থাকবে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধখুলশীতে তিন ভবন মালিককে ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা