করোনা দুর্দিনে জলাবদ্ধতায় ১০ হাজার মানুষের দুর্ভোগ

আনোয়ারার উপকূলীয় রায়পুর

আনোয়ারা প্রতিনিধি | সোমবার , ৫ জুলাই, ২০২১ at ৫:৫২ পূর্বাহ্ণ

করোনা দুর্দিনে আনোয়ারা উপজেলার উপকূলীয় রায়পুর ইউনিয়নবাসীর জন্য নতুন দুর্গতির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে জলাবদ্ধতা। টানা বর্ষণে জমে থাকা পানি সাগরে নিষ্কাষণের ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়ছে এখানকার ১০ হাজারের বেশি মানুষ। গত ৫ দিন ধরে চলছে এই ভোগান্তি। অনেকে ঘর থেকে বের হতে না পারায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, জলাবদ্ধতায় স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি এলাকার সড়ক উন্নয়ন কাজ, জমির বীজ তলা ও মাছ চাষের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
জানা যায়, আগে বেড়িবাঁধের ভাঙনকবলিত অংশ হয়ে বৃষ্টির পানি সাগরে গিয়ে পড়ত। সম্প্রতি উঁচু করে বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার পর পানি চলাচলের আধুনিক ব্যবস্থা বা স্লুইচ গেট না থাকায় বৃষ্টির পানি জমে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এই ভোগান্তি থেকে পরিত্রাণে স্লুইচ গেট নির্মাণের দাবি জানান এলাকাবাসী।
গত শনিবার বিকালে আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জোবায়ের আহমেদ রায়পুরের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলেছেন। পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস.এম.দিদারুল ইসলাম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জামিরুল ইসলাম, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফেরদৌস হোসেন, রায়পুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল আজিজ চৌধুরী, ইউপি সদস্য জাহেদুল আলম প্রমুখ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহেদুল আলম জানান, গত ৫ দিন ধরে অতি বৃষ্টির কারণে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ইউনিয়নের পূর্ব গহিরা, খোর্দ্দ গহিরা ও পশ্চিম রায়পুরের কানুমাঝির বাড়ি, ময়নাগাজির বাড়ি, খতিবের বাপের বাড়ি, আবদুস ছালাম তালুকদারের বাড়ি, দোভাষী বাড়ি, উঠান মাঝির বাড়িসহ এলাকার ১০ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। তিনি বলেন, ইউনিয়নের হাড়িয়াপাড়া এলাকায় আগের মত পানি চলাচল ব্যবস্থা না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
রায়পুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল আজিজ চৌধুরী জানান, ইউনিয়নের ময়নাগাজী সড়কটিতে ২ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলছে। গত ৫ দিনের জলাবদ্ধতায় সড়ক উন্নয়ন কাজের বহু মালামাল নষ্ট হয়েছে।
রায়পুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিন শরিফ জানান, বেড়িবাঁধের চলমান উন্নয়ন কাজের ফলে জোয়ারের পানি উঠানামার স্থায়ী সমাধান হলেও বেড়িবাঁধে প্রয়োজনীয় স্লুইচ গেট না থাকায় নতুন ভোগান্তি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। এতে এলাকার মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
ইউপি চেয়ারম্যান জানে আলম জানান, স্থানীয়রা অভিযোগ করেন হাড়িয়া পাড়া এলাকায় কিছু ব্যক্তি মাছ ধরার অজুহাতে স্বাভাবিক পানি চলাচল ব্যবস্থা বন্ধ করে দিলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জোবায়ের আহমদকে জানানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জোবায়ের আহমদ জানান, রায়পুর ইউনিয়নে জলাবদ্ধতার কারণ জানতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলছি। সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী চয়ন কুমার জানান, আনোয়ারার রায়পুরে জলাবদ্ধতা নিরসনে পূর্ব গহিরা এলাকার মোতালেব খালের মুখে আরো একটি স্লুইচ গেট নির্মাণের টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন আছে। এটি নির্মাণ কাজ শেষ হলে জলাবদ্ধতা সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবেসরকারি হাসপাতালে হিমশিম
পরবর্তী নিবন্ধপুলিশ দেখে ৫ লাখ টাকার মদ ফেলে পালালো ব্যবসায়ী