অবশেষে করোনাভাইরাসের কাছে হার মানলেন সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য ও নগর পরিকল্পনাবিদ প্রকৌশলী আলী আশরাফ। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬ মার্চ শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ২টার দিকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে তার মৃত্যু হয় (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে যান। প্রকৌশলী আলী আশরাফ ফটিকছড়ির মরহুম অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ নুরুল হুদার বড় ছেলে। তিনি চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সাবেক সভাপতি ও রোটারি সেন্টারের আজীবন সদস্যসহ বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
গতকাল রোববার বাদ জোহর জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে মরহুমের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয় তাঁর গ্রামের বাড়ি ফটিকছড়ির জাহানপুরে।
অধ্যাপক প্রকৌশলী এম আলী আশরাফ ১৯৭৬ সালে তৎকালীন চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হতে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ১৯৮৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যানসাস স্টেইট ইউনিভার্সিটি হতে নগর এবং অঞ্চল পরিকল্পনায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। প্রফেশনাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে (পিইঞ্জ) তিনি বাংলাদেশ প্রফেশনাল ইঞ্জিনিয়ার্স রেজিস্ট্রেশন বোর্ড কর্তৃক নিবন্ধিত। তিনি চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পিঅ্যান্ডডি বিশেষজ্ঞ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
নগর পরিকল্পনাবিদ ও ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট চট্টগ্রামের সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলী আশরাফের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি। বিবৃতিতে তিনি বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নে তাঁর অবদান চট্টগ্রামবাসী যুগে যুগে স্মরণ রাখবে। জাতি একজন দেশপ্রেমিক হারাল। তিনি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, চউক চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু সুফিযান, সাবেক এমপি মাজহারুল হক শাহ এবং চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সভাপতি আলহাজ্ব আলী আব্বাস এবং সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী । তারা শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদরা জানান।
শোক বার্তায় শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেল বলেন, প্রকৌশলী এম আলী আশরাফ চট্টগ্রামের উন্নয়ন এবং প্রগতির আন্দোলনের একজন অগ্রসৈনিক ছিলেন। তার ভাবনার পুরোটা জুড়ে ছিল চট্টগ্রামের উন্নয়ন। পরিকল্পিত নগরায়ণ করতে তিনি সর্বদা সোচ্চার ছিলেন। তার মৃত্যুতে জাতি একজন মেধাবী সন্তানকে হারালো। শিক্ষা উপমন্ত্রী মরহুমের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার পরিজনের প্রতি সমবেদনা জানান।
সাদার্ন ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং (পুরকৌশল) বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী প্রফেসর এম আলী আশরাফের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন সাদার্ন ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ। শোকবার্তায় সাদার্ন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. নুরুল মোস্তফা, ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান, উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর সরওয়ার জাহান, ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, রেজিস্ট্রার, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক ও কর্মকর্তারা মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল কার্যনির্বাহী কমিটি ও এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম মা-শিশু ও জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজ, ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেলথ, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল নার্সিং ইনস্টিটিউট, শামসুন নাহার খান নার্সিং কলেজ, অটিজম ও শিশু বিকাশ কেন্দ্রের সর্বস্তরের শিক্ষক/শিক্ষিকা, ডাক্তার, নার্স, কর্মকর্তা, কর্মচারীগণের পক্ষ থেকে ইঞ্জিনিয়ার এম আলী আশরাফের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করা হয় এবং শোকাহত পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়। মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে হাসপাতাল মসজিদে খতমে কোরআনসহ বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। জাতীয় যক্ষ্মা নিরোধ সমিতি (নাটাব) চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি মোরশেদুল আলম কাদেরী, সিনিয়র সহ সভাপতি শামসুল আলম শামীম ও সাধারণ সম্পাদক এম এ সবুরও গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।