কবি কামিনী রায় : নারী শিক্ষার অগ্রদূত

| বুধবার , ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৭:৫৬ পূর্বাহ্ণ

কামিনী রায় (১৮৬৪১৯৩৩)। কবি ও সমাজকর্মী। তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের প্রথম মহিলা স্নাতক ডিগ্রীধারী ব্যক্তিত্ব। তিনি একসময় ‘জনৈক বঙ্গমহিলা’ ছদ্মনামে লেখালেখি করতেন। কামিনী রায়ের জন্ম ১৮৬৪ সালের ১২ অক্টোবর ঝালকাঠি জেলার বাকেরগঞ্জের বাসণ্ডা গ্রামে। তার পিতা চণ্ডীচরণ সেন একজন ব্রাহ্মধর্মাবলম্বী, বিচারক ও ঐতিহাসিক লেখক ছিলেন। পিতা চণ্ডীচরণ সেনের কাছে কামিনী রায় প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। যে যুগে হিন্দু পুরমহিলাগণের লেখাপড়া করাকে একান্তই নিন্দনীয় ও গর্হিত কাজ হিসেবে বিবেচনা করা হতো সে যুগে কামিনী রায় গোপনে বাবা ও মায়ের কাছে শিক্ষা অর্জন করেন। তিনি ১২ বৎসর বয়সে কলকাতার একটি বোর্ডিং স্কুলে ভর্তি হন।

১৮৮০ সালে তিনি কলকাতা বেথুন স্কুল হতে এন্ট্রান্স (মাধ্যমিক) পরীক্ষা ও ১৮৮৩ সালে এফ.(উচ্চ মাধ্যমিক সমমানের) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। বেথুন কলেজ হতে তিনি ১৮৮৬ সালে ভারতের প্রথম নারী হিসাবে সংস্কৃত ভাষায় সম্মানসহ স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। ১৮৮৬ সালে তিনি বেথুন কলেজের স্কুল বিভাগে শিক্ষকতার মধ্যদিয়ে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীকালে তিনি ঐ কলেজে অধ্যাপনাও করেছিলেন। যে যুগে মেয়েদের শিক্ষাও বিরল ঘটনা ছিল, সেই সময়ে কামিনী রায় নারীদের পক্ষে কথা বলেন। তার অনেক প্রবন্ধেও এর প্রতিফলন ঘটেছে। তিনি নারী শ্রম তদন্ত কমিশন (১৯২২২৩) এর সদস্য ছিলেন। মাত্র ৮ বছর বয়স থেকে তিনি কবিতা লিখতেন। রচিত কবিতাগুলোতে জীবনের সুখদুঃখ, আশাআকাঙ্ক্ষা, আনন্দবেদনার সহজসরল ও সাবলীল প্রকাশ ঘটেছে। পনেরো বছর বয়সে তার প্রথম কাব্য গ্রন্থ ‘আলো ও ছায়া’ প্রকাশিত হয় ১৮৮৯ সালে। এ ছাড়াও তার লেখা উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে– ‘নির্মাল্য’, ‘পৌরাণিকী’, ‘মাল্য ও নির্মাল্য’, ‘অশোক সঙ্গীত’ (সনেট সংগ্রহ), ‘অম্বা’ (নাট্যকাব্য), ‘দীপ ও ধূপ’, ‘জীবন পথে’, ‘একলব্য’, ‘দ্রোণধৃষ্টদ্যুম্ন’, ‘শ্রাদ্ধিকী’ ইত্যাদি। ১৯২৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কামিনী রায় ‘জগত্তারিণী স্বর্ণপদক’ সম্মানে সম্মানিত হন। তিনি ১৯৩০ সালে বঙ্গীয় লিটারারি কনফারেন্সের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৩৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা : যাঁর নেতৃত্বে সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন সাফল্য-গাথা
পরবর্তী নিবন্ধএই দিনে