কবিতা শুদ্ধ শিল্প। পরিশুদ্ধ না হলে কবিতার বোধের কাছাকাছি পৌঁছানো কখনো সম্ভব হয় না। কবিতার অন্তরালে থাকে কিছু সত্য কথা। যেখানে বাস্তবতা মূল্যায়ন করে। শব্দের পরে শব্দ সাজিয়ে অনন্ত সম্ভাবনা তৈরী হলে কবিতা জন্ম হয়। নতুন সমাজ, নতুনরীতি, নতুন শব্দ চয়ণ। সেখানে সপ্তপদী ভালোবাসা আঁকতে হবে শব্দ পংক্তি দিয়ে। কবিতা লেখার জন্য কবিকে নিতে হয় স্বনির্বাচিত মনোরাজে নির্বাসন। কবিতা একটি শিল্পের নাম, কবিতা একটি কারুকার্যের নাম, কবিতার শব্দ নপুরের ঝংকার মত। শব্দ চয়নে নৈপুণ্যতা, ভাবের বাস্তবতায় সৃষ্টিশীল কবিকে করে তোলে মহান। তাই স্বেচ্ছায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে শাস্তি ও শান্তি দু‘টোই বহন করার ক্ষমতা অর্জন করতে হয় একজন কবিকে। শব্দের সিঁড়ি বেয়ে কবি মালা গাঁথে নিপুণভাবে। কবিতায় সামপ্রতিকতা শব্দে ভরে গেলে হোঁচট খাবে কবিত্ব এবং কবিতার শক্তি। ভাঙ্গবে নির্জন কুঠির। কখনো জাগবে না শব্দের মৃত্তিকা। হবে না সঠিক কাব্যিকতার সৃষ্টিশীল শব্দটা পুরো বোঝা যায় না। মানতে হবে প্রত্যেক লেখকইতো কোন না কোন ভাবে সৃষ্টিশীল। কবিতা লিখতে গেলে তার বিষয়বস্তু নির্ণয় করে শব্দের অলংকরণের বিষয়টি নিবিড় ভাবে সাজাতে হবে খুব সচেতনভাবে। কবি এবং কবিতা একে অন্যের পরিপূরক। শব্দের নির্মাণশৈলীর মধ্য দিয়েই স্বপ্ন কল্পে বিচরণ করতে হবে। কবিতা স্বপ্ন দেখায়, অবিশ্রান্ত মনকে নাড়া দেয়। যেখানে ছোট্ট নদী, আঁকা বাঁকা পথ, সবুজ গ্রাম, মাঠ ভরা সোনালী ধান, ঘাস, কেয়াবন, কাঁশবন, নীল আকাশ, পর্বত, বাতাসে আঁচল ঘেঁষে পতপত উড়ায়।
নদীর মোহনায় পাখিদের কলরব, আষাঢ়ে মেঘের খেলা, উচু নিচু পাহাড়ের সবুজের আলিঙ্গন, ঝর্নার নৈসৈর্গিক সৌন্দর্য, নাম না জানা হাজার ফুলের মেলা, প্রাকৃতিক অহংকার শব্দ চয়নে মন ছুঁয়ে যায় কাব্যিকতায়। অনেক সময় কবির চেতনায় লিখতে গিয়ে কবির আনন্দ বেদনা সুখ দুঃখকে কবিতার মধ্য দিয়ে প্রকাশ করতে গিয়ে মনকে হালকা করে এবং দীর্ঘ পথ পরিক্রমা পাড়ি দেয়। লিখতে লিখতে মানসিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। কবিতা নির্মাণ এবং সাজিয়ে লেখা কবিও কবিতার যৌথ প্রয়াসের শিল্পীর ফসল।












