কক্সবাজার সৈকতে এবার ভেসে এলো সামুদ্রিক কালাচ সাপ। গত সোমবার রাত ১১টার দিকে শহরের কলাতলী পয়েন্ট সৈকতে সাপটি ভেসে আসে। সাপটি ল্যাটিকডা কলাব্রিনা প্রজাতির বলে জানান বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানীরা।
এর আগে গত ৫ জুন কঙবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে জোয়ারের পানিতে ভেসে আসে ইয়োলো বেলিড সি স্নেক বা হলদেপেটী সামুদ্রিক সাপ। গত মে মাসের শেষের দিকেও একই প্রজাতির আরও দুটি সাপ ভেসে আসে। গত বছর ডিসেম্বরে সেন্টমার্টিনে আগস্টে কঙবাজার শহরের সমিতিপাড়া সৈকত পয়েন্টে এবং জুনে শহরের সুগন্ধা পয়েন্ট সৈকতে ইয়েলো বেলিড সাপের দেখা পাওয়া যায়।
গত বছর ১৪ নভেম্বর বিকালে পেঁচারদ্বীপ সমুদ্র সৈকতে জেলেদের টানা জালে ধরা পড়ে একটি হাইড্রোফিস প্রজাতির সামুদ্রিক সাপ। সাপটি বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের মেরিন স্পেসিমেন মিউজিয়ামে সংরক্ষণ করা হয়েছে। এর আগে গতবছর ১৩ অক্টোবর বিকালে ইনানী সমুদ্র সৈকতে একটি সামুদ্রিক সাপ ভেসে আসে।
তবে এই প্রথম ল্যাটিকডা কলাব্রিনা প্রজাতির সাপ দেখা গেল বলে জানান বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের (বোরি) মহাপরিচালক প্রফেসর ড. তৌহিদা রশীদ। তিনি বলেন, সোমবার রাত ১১টার দিকে শহরের কলাতলী পয়েন্ট সৈকতে একটি সামুদ্রিক সাপ ভেসে আসার খবর পেয়ে বোরির বিজ্ঞানীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেন। এরপর পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে সাপটি ল্যাটিকডা কলাব্রিনা প্রজাতির বলে শনাক্ত করেন বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীরা জানান, ল্যাটিকডা কলাব্রিনা বা হলুদ ঠোঁটযুক্ত সামুদ্রিক কালাচ সাধারণত অগভীর উপকূলীয় পানি, প্রবাল প্রাচীর ও উপহ্রদগুলোতে বাস করে। এটি সৈকতের পাথুরে অঞ্চলে পাওয়া যায় এবং স্থলভাগেও দেখা যায়। এই প্রজাতির সাপ ইন্দো–প্যাসিফিক অঞ্চলে বিচরণ করে। বাংলাদেশের সেন্টমার্টিন এং টেকনাফ থেকে ইনানী অঞ্চলের কোরাল ও পাথুরে উপকূলে পাওয়া যায়। সামুদ্রিক এই সাপ অত্যন্ত বিষধর এবং এর কোন এন্টিভেনম নেই। এর কামড়ে শরীর প্যারালাইজড হয়ে যায়। কিডনি, হার্ট আক্রান্ত হয় এবং ধীরে ধীরে কাজ করা বন্ধ করে দেয়। প্রস্রাবের রঙও পাল্টে যেতে পারে।
এই সাপের ব্যাপারে জেলেসহ সংশ্লিষ্টদের সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান কঙবাজার মেডিক্যাল কলেজের সংক্রামক ব্যাধি ও ট্রপিক্যাল মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শাহজাহান নাজির। তিনি বলেন, তবে সাম্প্রতিককালে কঙবাজারে কোন সামুদ্রিক সাপের দংশনের নজির নেই।