পুলিশ ও অবৈধ দখলদারদের সাথে ব্যাপক সংঘর্ষের পর আজ শনিবার (১৭ অক্টোবর) উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কক্সবাজার শহরের সমুদ্র তীরবর্তী সেই ৫২ অবৈধ স্থাপনা (দোকান) উচ্ছেদ করা হয়েছে।
সংঘর্ষে ওসি ও সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় জেলা প্রশাসন ও কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) উচ্ছেদ দল অর্ধ শতাধিক পুলিশ সদস্য নিয়ে সেই ৫২ অবৈধ দখলদারকে উচ্ছেদ করতে গেলে স্থাপনার মালিকদের তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়ে পুলিশ।
এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। সংঘর্ষ থামাতে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ এবং ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে পুলিশ।
প্রায় আধ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের পর পুলিশের শক্ত অবস্থানের মুখে পিছু হটে অবৈধ দখলদাররা।
সংঘর্ষে কক্সবাজার সদর থানার ওসি শেখ মুনীরুল গীয়াস ও যমুনা টিভির কক্সবাজার প্রতিনিধি নুরুল করিম রাসেলসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
এ ঘটনায় ৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের মাঝে বিএনপি ও সরকারদলীয় নেতারাও রয়েছেন।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সচিব আবু জাফর রাশেদ, কক্সবাজার সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ শাহরিয়ার মোক্তার, কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সচিব ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু জাফর রাশেদ জানান, আজ শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করে।
এসময় অবৈধ দখলদার, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বহিরাগত কিছু লোক একজোট হয়ে স্থাপনাগুলোর সামনে অবস্থান নেয় এবং বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। সন্ধ্যার পূর্বে অভিযানের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
তিনি জানান, পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্সধারী ব্যক্তিরা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলী সুগন্ধা পয়েন্টে বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা পরিচালনা করে আসায় কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল তাদের উচ্ছেদের নোটিশ দেয়।
পরে জসিম উদ্দিনসহ ৫২ জন একটি রিট আবেদন দায়ের করেন।
একই বছরের ১৬ এপ্রিল হাইকোর্ট রুল জারি করে স্থগিতাদেশ দেয়।
এর বিরুদ্ধে ভূমি মন্ত্রণালয় ও রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে।
গত ১ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ শুনানি শেষে হাইকোর্টের রুল ও স্থগিতাদেশ খারিজ করে রায় দেয়।
উল্লেখ্য, এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে প্রশাসন এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গিয়ে দখলদারদের প্রতিরোধের মুখে পিছু হটে।
পরে মালামাল সরানোর জন্য স্থাপনা মালিকদের শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিল।