কক্সবাজারের ঈদগাঁওয়ে বাস–মাইক্রো মুখোমুখি সংঘর্ষে ৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১২ জন। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কক্সবাজার–চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঈদগাঁওয়ের খোদাইবাড়ি এজি লুৎফুর কবির আদর্শ দাখিল মাদ্রাসা এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। তারা কক্সবাজারে বায়তুশ শরফ চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাঁশখালীতে ফিরছিলেন। নিহতরা হলেন চট্টগ্রামের বাঁশখালীর বাহারছড়ার ইলশা এলাকার মৃত মফিজুর রহমানের পুত্র আবু আহমেদ (৬৫), পশ্চিম ইলশা গ্রামের মৃত মাহবুবুল আলমের স্ত্রী মাহমুদা বেগম (৪৫), খানখানাবাদের ডোংরা এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের স্ত্রী ছায়রা খাতুন (৬৫), কুফিয়া ডোংরা এলাকার গোলাম সোবহানের পুত্র দুলা মিয়া (৬৫) ও বাহারছড়ার নুরুল আলমের স্ত্রী খদিজা বেগম (৫০) নামে অপর এক মহিলাসহ ৫ জনের মৃত্যুর ঘটনা নিশ্চিত হওয়া গেলেও সে সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে ধারনা করছে স্বজনেরা। নিহত আরেকজনের নাম পরিচয় জানা যায়নি। নিহতদের মধ্যে সায়রা খাতুন ও মাহমদা খাতুন মা–মেয়ে বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
দুর্ঘটনায় বাহারছরা ৮ নং ওয়ার্ডের মৃত আকমল মিয়ার ছেলে আব্দুল মান্নান, একই ইউপির দক্ষিণ ইলশা ৫ নং ওয়ার্ডের মৃত আবু ছালেকের স্ত্রী ফাতেমা বেগম, খানখানাবাদ ইউপির ৪ নং ওয়ার্ডের মৃত দুদু মিয়ার ছেলে আব্দুর রশিদ, কাথরিয়া ২ নং ওয়ার্ডের মাতব্বর বাড়ির তৈয়ব আলীর স্ত্রী জাহানারা বেগম, ৩ নং ওয়ার্ড বাগমারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে রফিক আহমদ, একই এলাকার আব্দুল কায়ুমের ছেলে নুরুল হোসেনসহ অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
ঈদগঁাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শুভরঞ্জন চাকমা স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানান, সোমবার সকালে কক্সবাজার–চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঈদগাঁও খোদাইবাড়ি এজি লুৎফুর কবির আদর্শ দাখিল মাদ্রাসার সামনে কক্সবাজারমুখী শ্যামলী পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাইক্রোবাসটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। এ দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে দুজন এবং হাসপাতালে নেওয়ার পর আরো ৪ জনের মৃত্যু হয়। হতাহতদের প্রায় সবাই মাইক্রোবাসের যাত্রী ছিলেন।
দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় বিষয়টি হতাহতের স্বজনদের নজরে আসে।
কক্সবাজার বায়তুশ শরফ চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসা সহায়ক কর্মকর্তা নেছার আহমদ জানান, বাঁশখালীর ২৬ জন রোগী চোখের চিকিৎসা শেষে গতকাল দুপুরে বাড়ি ফিরে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় পড়ে।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে বাহারছড়া রত্নপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে মাস্টার ছাবের আহমদ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। যাদের চোখে ছানি পড়েছে তাদের পৃথকভাবে ছানি অপারেশন ও চিকিৎসা করার জন্য বাঁশখালী থেকে কক্সবাজার নেওয়া হয়েছিল শুক্রবারে। চিকিৎসা শেষে গতকাল ফেরার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ডুলাহাজারা হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ মো. মোজাম্মেল হক বলেন, নিহতদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।