কক্সবাজার বেড়াতে গিয়ে লাশ মা-মেয়ে

বাঁশখালী প্রতিনিধি | শনিবার , ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৬:০৮ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজার শহরের হোটেলমোটেল জোনের একটি আবাসিক হোটেল থেকে মা ও তার কন্যা শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে কলাতলী সড়কের সী আলিফ হোটেল থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। নিহত মায়ের নাম সোমা দে (৩৫)। তাঁর ৮ মাস বয়সী মেয়ের নাম জানা যায়নি।

পুলিশ জানায়, নিহত সোমা দে বাঁশখালীর বৈলগাঁও বানীগ্রামের জেবিন দের (৪২) স্ত্রী ও একই উপজেলার নাথপুরা গ্রামের শচীন্দ্র দের মেয়ে। ঘটনার পর জেবিন দে দুই মেয়ে নিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। মামেয়ের লাশ খাটের পাশে পড়ে ছিল।

গতকাল শুক্রবার রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সুমা দের পরিবারের সদস্যরা লাশের জন্য কক্সবাজারে অবস্থান করলেও আইনী প্রক্রিয়া শেষ করে তখনও এলাকায় এসে পৌঁছেনি বলে পারিবারিক সূত্র জানায়।

জানা যায়, বাঁশখালীর পুকুরিয়া ইউনিয়নের নাটমুড়া এলাকার মৃত সচিন্দ্র দের কন্যা সূমা দের সাথে ১৫ বছর আগে বিয়ে হয় সাধনপুর ইউনিয়নের বাণীগ্রামের দুলাল দের পুত্র জেবিন দের সাথে। তাদের সংসারে তিন কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। তারা হলোদীপা দে (১১), জিতু দে () ও ৮ মাস বয়সী মার সাথে মারা যাওয়া কন্যা সন্তানটি। নিহত সুমা দের ভাই সমীরণ দে গতকাল আজাদীকে জানান, সংসারে আমিই একমাত্র ছেলে আর আমার তিন বোন। ১৫ বছর আগে জেবিন দের সাথে আমার বোনের বিয়ে হয়।

তাদের সংসারে তিন কন্যা সন্তান। এক সময় জেবিন দে চট্টগ্রামের কালুরঘাট এলাকায় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করলেও বিগত ২/৩ মাসে টাকা পয়সা দিয়ে তাকে আমরা ওমানে পাঠাই। কিন্ত সেখান থেকে কখন কিভাবে চলে আসে এবং বউ মেয়েদের নিয়ে কখন কক্সবাজার যায়

তার কিছুই জানিনা। কক্সবাজার থেকে আমার বোনের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর সেখানে আমার দুই বোনের জামাইসহ লোকজন প্রেরণ করি। আমি অসুস্থ তাই যেতে পারেনি। সী আলিফ হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার ইসমাইল জানান, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি সকালে তিন সন্তান ও স্বামীসহ হোটেলে উঠেন সুমা দে। হোটেল রেজিস্ট্রারে তার স্বামীর নাম দুলাল বিশ্বাস এবং ঠিকানা বাঁশখালী বলে উল্লেখ করা হয়। শুক্রবার

তাদের কক্ষ ছাড়ার কথা ছিলো। সেই হিসেবে সকাল সাড়ে ১১টায় কর্মচারী শাখাওয়াত ওই রুমে গিয়ে মামেয়ের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। হোটেল কর্মচারী শাখাওয়াত জানান, সকাল সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত ওই কক্ষে কারো কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে বাইরে থেকে বেশ

কয়েকবার ডাকাডাকি করা হয়। পরে ম্যানেজারের নির্দেশে মাস্টার কি (অতিরিক্ত চাবি) দিয়ে তালা খুলে এক নারী ও তার দুগ্ধপোষ্য শিশুর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে পুলিশকে খবর দেয়া হলে পুলিশ এসে মরদেহগুলো উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

ঘটনার ব্যাপারে বাঁশখালী থানার ওসি মো. কামাল উদ্দিন আজাদীকে বলেন, ঘটনার ব্যাপারে কক্সবাজার থানার ওসি বিষয়টি আমাকে অবগত করলে আমি পরিবারের লোকজনকে খবর দিয়ে সেখানে প্রেরণ করি। এটা যেহেতু কক্সবারের ঘটনা সেখানে লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে। মামলাও হবে সেখানে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাটহাজারীতে আগুনে ১৩ পরিবার নিঃস্ব, শিশুর মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধহাসপাতালে ভর্তির দুদিন পর শিশু গৃহকর্মীর মৃত্যু