কক্সবাজার সদর উপজেলায় একটি জনগুরুত্বপূর্ণ ব্রিজের কাজ অর্ধেক করে লাপাত্তা হয়ে গেছে ঠিকাদার। ফলে কাজ শুরুর দুই বছর অতিক্রান্ত হলেও ব্রিজটি নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। এতে উপজেলার খুরুশকুল ও পিএমখালী ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রামের মানুষ চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। তারপরও দুর্ভোগ লাঘবে ব্যবস্থা নিচ্ছে না সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সদর উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জরুরি সহায়তা প্রকল্প (ইএমসিআরপি) এর আওতায় সদর উপজেলার খুরুশকুল ও পিএমখালী ইউনিয়নের মধ্যবর্তী কুমারের ছড়ার (বাঁকখালী নদীতে বয়ে যাওয়া একটি উপ–খাল) ওপর এই ব্রিজ নির্মাণের অনুমোদন হয়। ১৮ মিটার দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট আরসিসি গার্ডার দিয়ে ২০২৩ সালে ১৬ কোটি ৯২ লাখ ৮১ হাজার ৪৬৪ টাকা ব্যয়ে ব্রিজটি নির্মাণ কাজের অনুমোদন হয়। এমইএমইই–হাসনা জেভি নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই ব্রিজ নির্মাণ কাজ পায়। পরে ওই বছরই নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কার্যাদেশ অনুসারে ২০২৪ সালের ১৫ জুনের মধ্যে শেষ করার কথা ছিলো। কিন্তু দীর্ঘ দুই বছর পেরিয়ে গেলেও কাজ শেষ করতে পারেনি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রায় একবছর আগে নির্মাণকাজ বন্ধ রেখে নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে রাতের আধাঁরে পালিয়ে যায় নির্মাণকাজের লোকজন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কেউ ব্রিজটি দেখতেও আসেনি। এতে আগে ভাঙা ব্রিজ দিয়ে চলাচল করতে পারলেও এখন কোনোভাবে যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। ফলে দুই ইউনিয়নের ২০ গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগে রয়েছেন।
স্থানীয় জয়নাল আবেদীন বলেন, ব্রিজটি খুরুশকুল ও পিএমখালি ইউনিয়নের জন্য খুবই জরুরি। এই ব্রিজ দিয়ে হাজার মানুষ যাতায়াত করে। প্রতিদিন কক্সবাজার শহরমুখী মানুষের জন্য খুবই প্রয়োজন এই ব্রিজ। গেল দুই বছর আগে ব্রিজটি দিয়ে কম সময়ে, স্বল্প ভাড়াই স্বাচ্ছন্দ মনে আসা–যাওয়া করে আসছিল মানুষ। কিন্তু যান চলাচলের বিকল্প সড়ক না করে পুনঃসংস্কারের নামে পুরাতন ব্রিজটি ভেঙে ফেলার কারণে দীর্ঘদিন যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। যার কারণে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বছরের পর বছর।
এ ব্যাপারে প্রকল্পের সুপারভাইজার তোফাজ্জল হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা এলজিইডির উপ–সহকারী প্রকৌশলী মো. হেলাল উদ্দিন, প্রকল্পের কাজ বন্ধ ও কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, এর মধ্যে প্রকল্প মেয়াদ বাড়িয়ে নিয়েছে ঠিকাদার। তাছাড়া দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে চিঠি দেওয়া হয়। প্রকল্পটি দ্রুত শেষ করতে ঠিকাদার সময় পাবেন। দুই মাস নয়, চাইলে ১০ দিনেও কাজ শেষ করা যায়। কাজ না করলে দশ বছরও শেষ করা যাবে না। কিন্তু পুনরায় বাড়ানো সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না করলে প্রকল্প বাতিল হতে হবে। প্রকল্পটি পুনঃটেন্ডার হবে কিনা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবেন।
জানতে চাইলে কাজ বন্ধ রাখার পক্ষে নানা অজুহাত দেখান ঠিকাদার আকরাম সিকদার। তিনি বলেন, আগামী দুই মাসের মধ্যেই এ প্রকল্পের কাজ শেষ করার চেষ্টা করবো। আশা করি পারবো।