বন্যা এবং বৈরি আবহাওয়াতেও কক্সবাজারে একমাসে ৭০৮ টন সামুদ্্িরক মাছ আহরণ করা হয়েছে। যা গত বছরের রেকর্ড ভেঙেছে। এ নিয়ে বেশ ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে মৎস্য ব্যবসায়ীরা। তবে এখনও চাহিদামতো ধরা পড়ছে না ইলিশ। যার কারণে বাজারে ইলিশের দাম উচ্চমুখী।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বছরের নির্দিষ্ট সময়ে মৎস্য শিকার বন্ধ থাকায় সমুদ্রে মাছ শিকারের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়। ফলে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা পড়ছে। জেলা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের মাছ ধরার উপর ৬৫ দিন নিষেধাজ্ঞা শেষে আগস্টে মাছ আহরণ হয় ৬৫৯ টন। আর এ বছর (২০২৪ সালের) আগস্টে আহরণ হয়েছে ৭০৮ টনের চেয়ে বেশি। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৫০ টন বেশি। কিন্তু জেলেদের জালে আশানুরূপ ইলিশ ধরা পড়ছে না। এ নিয়ে কাটছে না দুশ্চিন্তা।
মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছ বেশি আসলেও বাড়তি দাম নিয়ে হতাশ ক্রেতারা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেশি দামে জেলেদের কাছ থেকে মাছ কিনতে হচ্ছে। এছাড়া পরিবহন ও শ্রমিক খরচসহ নানা প্রতিবন্ধকতার কথা বলে মাছের দাম বাড়ার কারণ জানান তারা। ট্রলার মালিক জয়নাল আবেদীন সওদাগর বলেন, সাগরে ট্রলার পাঠাতে অনেক টাকার রসদ লাগে। তেলের দাম বেশি। এছাড়া চোরাই পথে ইলিশ পাচারসহ নানা অব্যবস্থাপনার কারণ মাছের দাম বাড়তি রয়েছে।
ফিশারীঘাটে গতকাল রোববার সকালে সাগর থেকে মাছ ধরে ফেরে এফবি মায়ের দোয়া। ট্রলারটির মালিক ফরিদ আহমদ সওদাগর বলেন, গত ৭ দিন আগে দেড় লাখ টাকার রসদ নিয়ে সাগরে রওনা দেয় ট্রলারটি। সাতদিন পর ইলিশ ধরা পড়েছে মাত্র ৩০০টি। এছাড়া অন্যান্য মাছসহ বিক্রি হয়েছে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে শুধু ২০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। এতে কীভাবে অতীতের লোকসান কাটবে।
জেলা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী জিএম রাব্বানী বলেন, অবতরণ কেন্দ্রে রূপচাঁদাসহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের দাম কমে আসলেও এখনও তুলনামূলকভাবে বাড়তি রয়েছে ইলিশের দাম। এ নিয়ে ইলিশের বাজারে গুঞ্জন রয়েছে–কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণে এমনটা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, নানা প্রতিকূলতার মাঝেও এ বছরের আগস্টে ৫০ টন বেশি মাছ অবতরণ হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এ পরিমাণ বাড়বে।