আনোয়ারা কালাবিবির দিঘি থেকে বাঁশখালী–চকরিয়া ঈদমনি পর্যন্ত ৫৮ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়কটি প্রশস্তকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। আনোয়ারার কালাবিবির দিঘি থেকে চকরিয়া পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়কটি সংস্কার হলে চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কের বিকল্প সড়ক হিসেবে যাত্রী সুবিধা ও মহাসড়কের ৩৫ কিলোমিটার দূরত্ব কমবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম সওজ বিভাগের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী জানান, ৫৮ কিলোমিটারের আঞ্চলিক এই সড়কটি প্রশস্তকরণে প্রায় দেড় বছর আগে ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে চট্টগ্রাম দক্ষিণ সড়ক বিভাগ। ডিপিপিতে প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে ১২শ’ ৮৯ কোটি টাকা। জানা গেছে, কর্ণফুলী টানেলকে বহুমুখী ব্যবহার উপযোগী করা এবং বিদ্যমান চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কে যানবাহনের চাপ কমানোর লক্ষ্যে আনোয়ারা থেকে বাঁশখালী–পেকুয়া–বদরখালী হয়ে চকরিয়া ঈদমনি পর্যন্ত এই আঞ্চলিক মহাসড়কটি প্রশস্তকরণে এবার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম দক্ষিণ সড়ক বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১২৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে পটিয়া–আনোয়ারা বাঁশখালী টইটং সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষে এক বছর আগে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
দোহাজারী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু কুমার চাকমার সাথে কথা বলে জানা গেছে, আনোয়ারা কালাবিবির দিঘি থেকে বাঁশখালী–টইটং–পেকুয়া–বদরখালী–চকরিয়া ঈদমনি পর্যন্ত ৫৮ দশমিক ২০ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়কটি প্রশস্ত এবং উন্নীতকরণে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবটি (ডিপিপি) তিনি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে প্রেরণ করেছেন। তার প্রেরিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবের উপর গত এপ্রিল মাসে মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প যাচাই কমিটির পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জানা গেছে, কর্ণফুলী টানেলকে বহুমুখী ব্যবহার উপযোগী করা এবং বিদ্যমান চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কে যানবাহনের চাপ কমানোর লক্ষ্যে আনোয়ারা থেকে বাঁশখালী হয়ে পেকুয়া–বদরখালী হয়ে চকরিয়া ঈদমনি পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়কটি প্রশস্তকরনে মন্ত্রণালয়ে ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে। আপাতত চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণের সম্ভাবনা কম। তাই ২ লেইনের মহাসড়কে বহুমুখী যানবাহনের চাপ কমানোর পাশাপাশি দুর্ঘটনা রোধে মহাসড়কের বিকল্প সড়ক হিসেবে আঞ্চলিক এই মহাসড়কটি প্রশস্তকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করা গেলে যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের পাশাপাশি নতুন এক অর্থনৈতিক অঞ্চল আবির্ভূত হবে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। টানেলের যানবাহন চলাচল বাড়ানো, দক্ষিণ চট্টগ্রামের ব্যবসা–বাণিজ্য সমপ্রসারণ, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও কক্সবাজার পর্যন্ত অর্থনৈতিক নেটওয়ার্ক গড়ার পরিকল্পনা হিসেবে টানেল সড়ক থেকে কক্সবাজার মূল সড়ক পর্যন্ত ৫৬ কিলোমিটার প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। এটি যথাসময়ে অনুমোদিত না হওয়ায় টানেলে গাড়ি চলাচল বাড়ানোসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের সড়ক ব্যবস্থা এখনো পিছিয়ে রয়েছে। চট্টগ্রামের আনোয়ারা–বাঁশখালী ও চকরিয়াবাসী দ্রুত প্রকল্পটির বাস্তবায়ন দেখতে চান। এই মেগা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে আনোয়ারার কালাবিবির দিঘি থেকে চকরিয়া পর্যন্ত ৫৬ কিলোমিটার সড়ক ১৮ থেকে ৩৪ ফুটে উন্নীত হওয়ার পাশাপাশি টানেল হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত অর্থনৈতিক অঞ্চলের যে সম্ভাবনা রয়েছে তা আরও বেগবান হবে।