কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন ও বাকলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. জামানের অপসারণ চেয়েছেন বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরের আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ে গিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামানের কাছে মৌখিকভাবে এ দাবি জানান তিনি। অন্যথায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর হুমকি দেন তিনি। এসময় আঞ্চলিক রিটানিং কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবরে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে ৮ দফা লিখিত দাবি পেশ করেন ডা. শাহাদাত।
একই সময়ে ডা. শাহাদাত হোসেন নিবাচনী আইন লঙ্ঘন করে ভোটারদের স্লিপ ও চিঠি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ইব্রাহীম হোসেন বাবুল।
জানা গেছে, গত বুধবার দিবাগত রাতে বিএনপি কার্যালয় নাসিমন ভবনের সামনের নূর আহম্মদ সড়কে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। এসময় ২১ নং জামাল খান ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ কাউন্সিলর প্রার্থী শৈবাল দাশ সুমনের সমর্থকদের সাথে বিএনপি সমর্থকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। পরে বিএনপি সমর্থকরা রাবেয়া রহমান গলির মুখে নৌকা আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুরের অভিযোগ করেন শৈবাল দাশ সুমন। এসময় বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে জানিয়েছে বিএনপি। এ ঘটনায় নগর ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য মোশারুফুল হক চৌধুরী পাভেল বাদি হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ওসি নেজামের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে শাহাদাত রিটার্নিং কর্মকর্তাকে বলেন, দুদিন আগে থানায় যোগ দিয়ে ওসি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ওসি নেজাম উদ্দিন এবং বাকলিয়া থানার এসআই জামান ঘরে ঘরে গিয়ে মানুষকে হুমকিধমকি দিচ্ছেন। পরে সাংবাদিকদের ডা. শাহাদাত বলেন, ওসি নেজাম ও এসআই জামানকে প্রত্যাহার করা না হলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারি। জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে গত সোমবার বাকলিয়া থানা থেকে নেজাম উদ্দিনকে কোতোয়ালী থানায় বদলি করা হয়। এর আগে বাকলিয়া থানায় কর্মরত থাকাকালীন গত ২৮ নভেম্বর ডা. শাহাদাত হোসেনের করোনা সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠানের মাইক বন্ধ করে দেন নেজাম উদ্দিন। ওই সময় নেজাম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘সভা এবং মাইক ব্যবহারের অনুমতিপত্র দেখতে চাইলে তারা দেখাতে পারেননি। তাই আমরা মাইকের সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছি।’ রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, ‘বিএনপি প্রার্থীর অভিযোগ ও দাবি শুনেছি। যেসব বিষয় আমার এখতিয়ারে আছে সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করব। বাকিগুলো নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হবে। এদিকে শাহাদাতের লিখিত আট দফা দাবিগুলো হচ্ছে- ভোটার লাইনে বহিরাগতদের ঠেকাতে জাতীয় পরিচয়পত্র পরীক্ষা করা, ইভিএমের প্যানেল সুরক্ষার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সশস্ত্র কর্মকর্তা নিয়োগ এবং নির্বাচনকে সামনে রেখে করা ‘মিথ্যা’ মামলা প্রত্যাহার ইত্যাদি।