চমেক হাসপাতালের সামনে অনুষ্ঠিত কিডনি ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধির আন্দোলন থেকে গ্রেপ্তার হওয়া সৈয়দ মো. মোস্তাকিমকে হেফাজতে নির্যাতন করা হয়েছে এমন অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তথ্যগত ভুল উল্লেখ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। এতে মামলার দুই আসামি যথাক্রমে পাঁচলাইশ থানার ওসি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ও এসআই আবদুল আজিজের অব্যাহতি চাওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. শাহনেওয়াজ খালেদ চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি দাখিল করেন। গতকাল বিষয়টি জানাজানি হয়। সিআইডি কর্মকর্তা মো. শাহনেওয়াজ খালেদ আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তথ্যগত ভুল উল্লেখ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি দাখিল করেছি। এতে দুই আসামির অব্যাহতি চাওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে মোস্তাকিমের আইনজীবী জিয়া হাবীব আহসান বলেন, চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার আগে বাদীকে তা জানাতে হয় এবং পাবিলক প্রসিকিউটরের কাছ থেকে মতামত নিতে হয়। এসবের কিছুই করা হয়নি। প্রতিবেদন দাখিল বিষয়টি সত্য হলে আমরা আলাপ আলোচনা করব এবং অবশ্যই নারাজি পিটিশন দাখিল করব। তিনি বলেন, ঘটনার পর থেকেই ছুটিতে চলে যান ওসি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন। এখন তিনি অফিস করছেন। সবকিছু রহস্যজনক।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ জেবুন্নেছার আদালতে সৈয়দ মো. মোস্তাকিম নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন ২০১৩ এর ১৩ (১), (২) এর (ক) (খ) (গ) এবং ১৫ (১) ধারায় মামলাটি দায়ের করেন। তখন আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, মায়ের কিডনি ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে গত ১০ জানুয়ারি চমেক হাসপাতালের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনের একপর্যায়ে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিনসহ একদল পুলিশ সেখানে জড়ো হয় এবং আন্দোলনকারীদের উপর চড়াও হয়। এছাড়া গ্রেপ্তার করা হয় আন্দোলনকারী সৈয়দ মো. মোস্তাকিমকে। তখন তাকে মারধর করা হয় এবং থানায় নিয়ে গিয়েও মারধর ও নির্যাতন করা হয়। মারধরের সময় এসআই আবদুল আজিজ মোস্তাকিমকে বলেন ‘ওসি নাজিম স্যারের সঙ্গে আর বেয়াদবি করবি?’ এ সময় ওসি নাজিম বলেন, ‘শালারে রিমান্ডে এনে থানায় পিটাতে হবে, তারপর বুঝবি পুলিশ কি জিনিস?’ এরপর থানায় মারধরের বিষয়টি ফাঁস করলে মোস্তাকিমকে ক্রসফায়ার দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।