কবিগুরু বলেছেন, ‘নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিঃশ্বাস, ওপারেতে সর্বসুখ আমার বিশ্বাস’। এই উক্তিটি আমাদের মানবজীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। আমাদের সংক্ষিপ্ত জীবনে আকাঙ্ক্ষা বেশি, সন্তুষ্টি কম। আমরা নিজেদের যা আছে তা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ না করে অন্যের অর্থ ও সুখ সমৃদ্ধির হিসাব করি। প্রায় অভিভাবক বলে থাকেন অমুকের ছেলে, তমুকের মেয়ে ডাক্তার, ইঞ্জিনিযার, কত বড় অফিসে চাকরি করে। ওদের ছেলের সাথে কত বড় লোকের সুন্দরী মেয়ের বিয়ে হলো। তার মেয়ে কে শিল্পপতির ছেলের সাথে বিয়ে দিলো। আর আমাদের বৌমা দেখ, একে তো রূপ নেই, গুণ নেই, বাপের বাড়ির সম্পদও নেই। অমুকের ছেলেটা শ্বশুরবাড়িতে কত আদর পায় আর আমাদের ছেলে যেতেই চায় না। আমরা প্রায় সময় নিজের চেয়ে অন্যের সুখ ও ঐশ্বর্যকে বড় করে দেখি। নিজেদের চাওয়া পাওয়া মেটানোর জন্য আজীবন ছুটে চলি। সবসময় আমাদের সবকিছুতে অতৃপ্তির বেদনা গ্রাস করে। প্রত্যেক মানুষের জীবনে সুখ, দুঃখ, আনন্দ, বেদনা, লাভ, ক্ষতি থাকে সে ধনী হোক বা গরীব। স্রষ্টা প্রত্যেক মানুষকে কিছু না কিছু গুণ দিয়েছেন। অন্যের প্রতি ঈর্ষা, অহংকার, সমালোচনা অহেতুক হীনমন্যতার জন্ম দেয়। তাই আমাদের সকলের উচিত এই সংক্ষিপ্ত জীবনকে সুন্দর ও আনন্দে ভরে তোলার জন্য নিজের যা আছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা। কারো সাথে বিবাদ, বিদ্বেষ না রেখে সামনে এগিয়ে চলা। মৃত্যুর পরও যাতে কারো ঘৃণার পাত্র না হয়ে সবার স্মরণে থাকা যায় সেই চেষ্টা করা। তবেই জীবনে পূর্ণ তৃপ্তি ও আনন্দ লাভ করা যায়।