সরকারের উন্নয়নে দেশের মানুষ যখন একটু স্বস্তিতে ছিল, তখন বিএনপি ও তাদের মিত্ররা ফের জ্বালাও–পোড়াও করে মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, স্কুল–কলেজের ছেলেমেয়েরা যেখানে ফাইনাল পরীক্ষা দেবে, তাদের লেখাপড়া নষ্ট করছে। ওদের সুমতি হোক। এই ধ্বংসযজ্ঞ, অগ্নিসন্ত্রাস বন্ধ করুক। গতকাল গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে চট্টগ্রাম নগরীতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তি স্থাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপি–জামায়াতের অবরোধ কর্মসূচিতে যানবাহনে অগ্নিসংযোগের প্রসঙ্গ ধরে তিনি বলেন, এদেশের মানুষ একটু স্বস্তিতে ছিল, শান্তিতে ছিল, উন্নয়নটা দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছিল। ঠিক সেই সময়েই আবার সেই অবরোধ, অগ্নিসন্ত্রাস, জ্বালাও–পোড়াও, গাড়িতে–বাসে আগুন দিয়ে মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত করা হচ্ছে। খবর বিডিনিউজের।
বিএনপি আসলে নির্বাচনে আসতে চায় না মন্তব্য করে সরকারপ্রধান বলেন, আপনারাই বলেন, ৩০টা আসন যারা পেয়েছিল, তাদের তো নির্বাচনে আসার আকাঙ্ক্ষাই থাকবে না। নির্বাচনকে বানচাল করে একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে আবার বাংলাদেশের মানুষকে একটা ভোগান্তিতে ফেলাই তাদের চেষ্টা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ ভোট দিলে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে। তবে ভোট না দিলেও তার আফসোস থাকবে না। আমি দেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় নিয়ে এসেছি। এইটুকু তো করেছি। জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছি আমরা। জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দেবে।
৯৭ হাজার ৪৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৪টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ১৫৭টি প্রকল্পের অধীনে ৪ হাজার ৬৪৪টি অবকাঠামোর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং জমিসহ ৫৩৯৭টি ঘর হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয় এ অনুষ্ঠানে।
আসন্ন নির্বাচনের আগেই এসব প্রকল্পের উদ্বোধন করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের নির্বাচনও ঘনিয়ে এসেছে। হয়ত দুয়েকদিনের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। তার আগেই আমাদের কাজগুলো উদ্বোধন করে দিতে চাই। এর কারণ হলো, ১৯৯৬ সালে অনেকগুলো কাজ করেছিলাম। সবগুলো তখন উদ্বোধন করতে পারিনি। তখন পরবর্তীতে যে সরকার এসেছে, সরকারে আসার এক মাসের মধ্যেই সেই দক্ষিণাঞ্চলে গাবখান ব্রিজ উদ্বোধন করার সময় খালেদা জিয়া বক্তৃতা দিচ্ছেন যে, এই সরকার কোনো উন্নয়নই করেনি। মানে উনি এক মাসের মধ্যে ব্রিজ নির্মাণ করে ফেলেছেন। তাই এবারে আমরা যেটুকু কাজ করেছি, উদ্বোধন করে দিয়ে যাই।
সরকার তৃণমূল থেকে দেশের উন্নয়নে কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ। তারও পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি। সেজন্য প্রযুক্তি শিক্ষা, কম্পিউটারসহ সব শিক্ষার ব্যবস্থা আমরা করে যাচ্ছি। তৃণমূল থেকে আমরা দেশের উন্নয়নের কাজ শুরু করেছি। প্রত্যেকটা গ্রামের মানুষ শহরের সুবিধা পাবে, সেজন্য রাস্তাঘাট, রেল, সড়ক সব ব্যবস্থা করছি। ব্যবসা–বাণিজ্য সব জায়গাতেই আমরা সুবিধা নিয়ে এসেছি। বস্তিবাসীদের জন্য আমরা ফ্ল্যাট নির্মাণ শুরু করেছি, বেদে শ্রেণিকে ভূমিতে ঘর দিয়েছি, হিজড়াদের আমরা স্বীকৃতি দিয়েছি, পুনর্বাসন করেছি, পরিবারের সাথে যেন বাস করতে পারে, সেই ব্যবস্থা করেছি। হরিজন, যারা পরিচ্ছন্নকর্মী তাদের জন্যও আমরা ফ্ল্যাট নির্মাণ করে দিয়েছি। পর্যায়ক্রমে আমরা সারা দেশে আমরা করব।