এস আলম গ্রুপ, কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার পরিচালক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সব স্থাবর সম্পদের তালিকা দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। একটি রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের বেঞ্চ গতকাল রোববার রুলসহ এ আদেশ দেয়। এস আলম গ্রুপ, কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার পরিচালক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সব স্থাবর সম্পদের তালিকা দাখিল করার নির্দেশনা এবং এসব সম্পদ স্থানান্তর বা বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে গত ১৭ সেপ্টেম্বর রিট করেছিলেন আইনজীবী মো. রুকুনুজ্জামান। গতকাল রোববার রিটের শুনানিও করেন তিনি। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানি করেন শাহীন আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান। খবর বিডিনিউজের।
রিটকারী আইনজীবী রুকুনুজ্জামান বলেন, স্থাবর সব সম্পদের তালিকা দাখিল করতে আইন সচিব ও নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শকের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এসব সম্পদ স্থানান্তর বা বিক্রির ওপর কেন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে।
এস আলম ফিন্যানসিয়াল ‘মাফিয়া’ : শুনানিতে এস আলমকে ইঙ্গিত করে রিটকারী আইনজীবী মো. রুকুনুজ্জামান আদালতে বলেন, ৭৫ হাজার কোটি টাকা দেশ থেকে নিয়ে গেছে, ফিন্যানসিয়াল মাফিয়া। তাদের সম্পদ স্থানান্তর বা বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা না দিলে সব সবকিছু নিয়ে যাবে উল্লেখ করে তিনি আদালতে বলেন, সব জায়গায় তাদের লোক বসে আছে। সবাইকে চিঠি (আইনি নোটিশ) দিয়েছি, কেউ জবাব দেয়নি।
দুদককে মামলা থেকে বাদ : বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে দুদক কাজ শুরু করে দেওয়ায় তাদের এই মামলার বিবাদীপক্ষ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। গত ২২ সেপ্টেম্বর শুনানির দিন দুদকের আইনজীবীকে এস আলমের দুর্নীতির বিষয়ে তদন্তের প্রতিবেদন দিতে বলেছিল আদালত। সে অনুযায়ী তারা আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। এ বিষয়ে শুনানিতে দুদকের আইনজীবী শাহীন আহমেদ বলেন, এর আগে এস আলমের সম্পদের তদন্ত চেয়ে করা আরেকটি রিটে হাই কোর্টের আরেকটি বেঞ্চ রুল জারি করেছিল। পরে এস আলমের মালিক সাইফুল আলম ওই রুলের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যান। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি হাই কোর্টের ওই রুল স্থগিত করে তার শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ হাই কোর্টের রুল খারিজ করে মামলাটি নিষ্পত্তি করে দেয়। তবে এ বিষয়ে তদন্তকাজ নিয়ম অনুযায়ী চলতে কোনো বাধা নেই বলে আপিল বিভাগের ওই আদেশে বলা হয়। শাহীন আহমেদ বলেন, সেই অনুযায়ী দুদক ইতোমধ্যে তদন্ত কাজ শুরু করেছে। তাই এই মামলায় তাদের রাখার কোনো প্রয়োজন নেই।
এ বিষয়ে রিটকারীর আইনজীবী বিরোধিতা করলেও আদালত শেষ পর্যন্ত দুদককে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেয়।