এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি চলবে অক্টোবরে

নির্বাচনের আগে এটি চট্টগ্রামবাসীকে উপহার দিতে চায় সরকার, দিনে-রাতে কাজ চলছে

হাসান আকবর | রবিবার , ১৩ আগস্ট, ২০২৩ at ৫:৫৩ পূর্বাহ্ণ

নগরীর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে অক্টোবরে গাড়ি চলবে। নির্বাচনের আগে চট্টগ্রামবাসীকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উপহার দিতে চায় সরকার। অক্টোবরের মধ্যেই পতেঙ্গা থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে চালু করার টার্গেট দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে।

সরকারের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে এক্সপ্রেসওয়ের উপর দিয়ে যান চলাচল শুরু করতে রাতেদিনে কাজ চলছে। তবে সাম্প্রতিক বর্ষণসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রায় ৮ দিন নির্মাণ কাজ বন্ধ ছিল। এতে সংশ্লিষ্টদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে।

প্রাথমিকভাবে লালখান বাজারে মুরাদপুর থেকে আসা আখতারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভারের সাথে যুক্ত করা না হলেও বিমানবন্দর থেকে আসা গাড়ি যাতে লালখান বাজারের ম্যাজিস্ট্রেট কলোনির সামনে নামতে পারে তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। একইভাবে ম্যাজিস্ট্রেট কলোনির সামনে থেকে গাড়ি ফ্লাইওভারে ওঠার অস্থায়ী ব্যবস্থা করা হবে। কিছুটা ট্রাফিক পরিবর্তন করে এই ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। পুরো ফ্লাইওভারের কাজ শেষ করে এটিকে আখতারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভারের সাথে যুক্ত করতে মাস দুয়েক বাড়তি সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুর রহমান। ইতোমধ্যে প্রকল্পের ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলেও জানান তিনি।

প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুর রহমান জানান, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পুরো কাজ টেকনিক্যাল ও ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা সব ধরনের ঝুঁকি ম্যানেজ করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে কাজ একেবারে শেষ দিকে চলে এসেছে। ফ্লাইওভারের উপর রাস্তা তৈরির কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। রাতেদিনে কার্পেটিং চলছে। পতেঙ্গা থেকে সল্টগোলা ক্রসিং পর্যন্ত গাড়ি চলাচলের জন্য প্রস্তুত হয়ে গেছে। সল্টগোলা থেকে চৌমুহনী পর্যন্ত এলাকার কাজও একেবারে শেষ পর্যায়ে। শুধু বারিক বিল্ডিং এলাকায় তিনটি স্প্যানের কাজ বাকি। এটির কাজও চলছে। চৌমুহনী থেকে ম্যাজিস্ট্রেট কলোনির সামনের এলাকা পর্যন্ত কাজ বাকি। এর মধ্যে অধিকাংশ পিলার তৈরি ও পাইলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। এটিই আমাদেরকে আগামী আড়াই মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। আমরা নিরলসভাবে কাজ করছি। সাম্প্রতিক দুর্যোগ আমাদেরকে কিছুটা পিছিয়ে দিয়েছে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা টানেল রোড পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মিত হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি নির্মিত হলে শহরের যে কোনো অংশ থেকে ২০২৫ মিনিটে বিমানবন্দরে আসাযাওয়া করা যাবে। লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা সৈকত পর্যন্ত বলা হলেও মূলত এক্সপ্রেসওয়ে শুরু হচ্ছে বহদ্দারহাট থেকে। বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার থেকে নেমে মুরাদপুরলালখান বাজারের বিদ্যমান আখতারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভারের সাথে জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের পাশে নির্মাণাধীন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যুক্ত করা হচ্ছে। এর ফলে মুরাদপুর থেকে ফ্লাইওভারে ওঠা কোনো গাড়ি সরাসরি পতেঙ্গা সৈকত বা টানেল রোড পর্যন্ত যেতে পারবে।

পতেঙ্গা থেকে শহরে আসা গাড়িগুলো টাইগারপাস হয়ে লালখান বাজারে ম্যাজিস্ট্রেট কলোনির সামনে নিচে নামবে এবং যাদের মুরাদপুর বা বহদ্দারহাট কিংবা ওই রোড ধরে অন্য কোথাও যাওয়া দরকার তারা লালখান বাজার থেকে আবারো ফ্লাইওভারে চড়তে পারবে। টাইগারপাসে পাহাড় না কাটার জন্য এক্সপ্রেসওয়ের চার লেনের মধ্যে দুই লাইন নিচে নামিয়ে দিয়ে ডিজাইন করা হয়। মূল ফ্লাইওভার থেকে পরবর্তীতে নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে লুপ ও র‌্যাম্প নামানো হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅনলাইন জুয়ার ফাঁদে পড়ে যে পথে গেল ওরা
পরবর্তী নিবন্ধউদ্যোক্তা সৃষ্টি, কিছু প্রস্তাবনা