দেশে বিরাজমান ডলার সংকটের বড় ধাক্কা লেগেছে চট্টগ্রাম বন্দরে। ডলারের অভাবে এলসি খুলতে না পারায় বন্দর কর্তৃপক্ষের জরুরি ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ করতে পারছে না। চীনে ১৬ স্ট্র্যাডল ক্যারিয়ার প্রস্তুত হয়ে কারখানায় পড়ে থাকলেও এলসি ওপেন করতে না পারায় সেগুলো আনা সম্ভব হচ্ছে না। একইভাবে বন্দরের প্রায় হাজার কোটি টাকার ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ প্রকল্পের আরো কয়েকটি প্যাকেজের ইকুইপমেন্টও আনা সম্ভব হচ্ছে না। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ আশাবাদ ব্যক্ত করেছে যে, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভালোর দিকে যাচ্ছে। আমরা আগামী জুনের মধ্যে ইকুইপমেন্টগুলো সংগ্রহ করতে পারবো বলে আশা করছি।
সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন ইকুইপমেন্টের আয়ুস্কাল ফুরিয়েছে। এসব ইকুইপমেন্ট দিয়ে বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সম্ভব হচ্ছে না। বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ সার্বিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনতে ৯১৪ কোটি ব্যয়ে ১০৪টি ইকুইপমেন্ট (যন্ত্রপাতি) সংগ্রহ করার উদ্যোগ নেয়া হয়। চারটি কী গ্যান্ট্রি ক্রেন ছাড়াও এই প্রকল্পের আওতায় ২টি মোবাইল ক্রেন (১০০ টন), ২টি মোবাইল ক্রেন (৫০ টন), ২টি মোবাইল ক্রেন (৩০ টন), ১২টি মোবাইল ক্রেন (২০ টন), ২৩টি মোবাইল ক্রেন (১০টন), ১১টি রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি ক্রেন (আরটিজি), ২১টি ফোর–হাই স্ট্র্যাডেল ক্যারিয়ার, ৬টি টু–হাই স্ট্র্যাডেল ক্যারিয়ার, ৪টি রীচ স্টেকার (লোড) ৪টি, ২টি কন্টেনার মোভার, ৪টি ভেরিয়েবল রীচ ট্রাক (৪৫ টন), ২টি লগ হ্যান্ডলার–স্টেকার, ৪টি ফর্ক লিফট ট্রাক (২০ টন) ১টি ম্যাটেরিয়াল–মাল্টি হ্যান্ডলার (৩৫ টন), ২টি লো বেড ট্রেইলার, ২টি হেভী ট্রাক্টর–পাওয়ার রয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র ৪টি কী গ্যান্ট্রি ক্রেনের দামই আড়াইশ’ কোটিরও বেশি টাকা। চট্টগ্রাম বন্দরের ইতিহাসে প্রথম বারের মতো যুক্ত হতে যাওয়া ১০০ টন ধারণক্ষমতার ক্রেনের দামও অনেক। এছাড়া ৫০ টন ধারণক্ষমতার ক্রেনও রয়েছে। এগুলোর বেশ দাম। এছাড়া আরটিজি, মোবাইল হারবার ক্রেন, রীচ স্ট্রেকারসহ সবগুলো ইকুইপমেন্টই বেশ দামি। ইতোমধ্যে এই প্রকল্পের ৫৯টি ইকুইপমেন্ট চট্টগ্রাম বন্দরের বহরে যুক্ত হয়েছে।
বাকি ইকুইপমেন্টগুলোর মধ্যে ১৬টি স্ট্রাডল ক্যারিয়ার চীনে তৈরি হয়ে রয়েছে। এগুলো চট্টগ্রামে আরো বেশ কিছুদিন আগে পৌঁছার কথা ছিল। কিন্তু এলসি ওপেন করা সম্ভব না হওয়ায় ইকুইপমেন্টগুলো আনা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া ২৩টি মোবাইল ক্রেন, একটি মাল্টি হ্যান্ডলার এবং ২টি ট্রেইলরসহ অন্যান্য ইকুইপমেন্টগুলো এলসি খোলা সম্ভব না হওয়ায় সিডিউল অনুযায়ী আসবে কিনা সংশয় দেখা দিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে গতকাল চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চিফ ইঞ্জিনিয়ার (যান্ত্রিক) আমিনুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আগামী জুনের মধ্যে সবগুলো ইকুইপমেন্টই দেশে পৌঁছাবে বলে আশা করছি। এলসি খোলা সংক্রান্ত সংকটের ব্যাপারে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।