এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া কষ্টকর

সড়কে প্রাণ গেল চবি শিক্ষকের ।। অবরোধের পর স্পিড ব্রেকার ও জেব্রা ক্রসিংয়ের কাজ শুরু, চালক আটক

চবি প্রতিনিধি | রবিবার , ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ১০:১১ পূর্বাহ্ণ

‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মেধাবী, সৎ, ভদ্র এবং নিষ্ঠাবান একজন শিক্ষককে হারাল। দেশ ও জাতির জন্য এটি একটি অপূরণীয় ক্ষতি। ড. আফতাবের চেহারাটা বারবার চোখের সামনে ভেসে উঠছে। তার চলে যাওয়াটা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে।’ কথাগুলো বলছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. সেলিনা আখতার। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক নম্বর গেট এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আফতাব হোসেন। গত শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে স্কুটি চালিয়ে তিনি ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন। এক নম্বর গেট দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের সময় প্রাইভেটকার পেছন থেকে চাপা দেয়। গুরুতর আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
শিক্ষকের মৃত্যুতে শোকে মুহ্যমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। জানাজায় উপস্থিত অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও শিক্ষককে নিয়ে নানা স্মৃতি প্রকাশ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনার পরপর এক নম্বর গেটে আঁকা হয়েছে জেব্রা ক্রসিং। শুরু হয়েছে স্পিড ব্রেকারের নির্মাণ কাজ।
এদিকে শিক্ষককে ধাক্কা দেয়া কার চালক মো. মাসুদ পারভেজকে গতকাল আটক করেছে পুলিশ। দুর্ঘটনার পর তাকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে স্থানীয় লোকজন। আটক মাসুদ হাটহাজারী উপজেলার ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত নুরুল আলমের ছেলে। ঘটনার পর এক নম্বর গেটের সামনে স্পিড ব্রেকার ও ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের দাবিতে ৫ ঘণ্টা চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়ক অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে আন্দোলন থেকে সরে আসে তারা।

গতকাল দুপুর ২টায় অধ্যাপক আফতাবের নামাজে জানাজা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। পরে কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও আফতাব হোসেনের সহকর্মী ড. ইসমাইল মিয়া বলেন, খবরটি পাওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে যে, আফতাব স্যার নেই। তিনি অত্যন্ত ভালো মানুষ ছিলেন। ভালো শিক্ষক হিসেবে তিনি বিভাগে যেমন জনপ্রিয় ছিলেন তেমনি জনপ্রিয় ছিলেন ভালো সহকর্মী হিসেবে। তাকে হারিয়ে আমরা বাক্‌রুদ্ধ।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া বলেন, আমাদের শিক্ষক আফতাব হোসেনকে হারিয়ে আমরা শোকাহত। স্পিড ব্রেকার স্থাপনের বিষয়ে সড়ক ও জনপদ অধিদফতরকে এর আগেও অনেকবার জানিয়েছিলাম। গতকাল রাতে শিক্ষকের মৃত্যুর পর আরও জোরালোভাবে জানানো হয়েছে। এছাড়া হাটহাজারী প্রশাসনের সঙ্গেও এ ব্যাপারে কথা বলেছি। ইতোমধ্যে জেব্রা ক্রসিং ও স্পিড ব্রেকার স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআইপিএস বিক্রি ১০ শতাংশ বেড়েছে
পরবর্তী নিবন্ধপটিয়ার ১৭ ইউনিয়নে ছাত্রলীগের কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু