সাধারণ মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো ডাল-আলুর উপরই নির্ভরশীল। কিন্তু বাজারে ডালের পর এবার দাম বেড়েছে আলুর। যা নিকট অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে। খুচরা বাজারের ২০ টাকা কেজির আলু কয়েক দফায় বেড়ে এখন ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অবশ্য পাইকারিতে আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৭ টাকা দরে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে পণ্যটির দাম বেড়েছে ৬ টাকা। কোল্ড স্টোরেজের মালিকরা জানান, চলতি বছর তুলনামূলকভাবে আলুর উৎপাদন কম হয়েছে। এছাড়া করোনাকালে প্রচুর পরিমাণ আলু ত্রাণ হিসেবে বিলি বণ্টন করা হয়েছে। ফলে হঠাৎ করে দেশে আলুর সংকট দেখা দেয়। নগরীর চাক্তাই খাতুনগঞ্জের কয়েকজন আড়তদার জানান, অবস্থা বুঝে কিছু কোল্ড স্টোরেজ মালিক কম দামে আলু কিনে মজুদ করে রাখেন। সরবরাহ সংকট তৈরি করে পরিকল্পিতভাবে দাম বৃদ্ধি করে যাচ্ছেন। আড়তদারদের বেশি মুনাফা করার সুযোগ নাই। কারণ আলু বেশি দিন গুদামজাত করে রাখা যায় না। তার উপর এখন আবহাওয়া খুব উত্তপ্ত।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতি বছর সাধারণত অক্টোবর-নভেম্বর মাসে দেশে আলুর কিছুটা সংকট দেখা দেয়। কিন্তু চলতি বছর জুন মাস থেকেই পণ্যটির সংকট দেখা দিয়েছে। আর সরবরাহ কমে যাওয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির মূল্য প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে আলুর দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে সর্বোচ্চ ৬ টাকা পর্যন্ত। কোল্ড স্টোরেজের মালিকরা জানান, প্রতি বছর দেশে এক কোটি টন আলু উৎপাদিত হচ্ছে। এরমধ্যে দেশে ব্যবহার হয় ৭০ লাখ টনের মতো। বাকি ৩০ লাখ টন আলু প্রতি বছর উদ্বৃত্ত থাকছে। চলতি বছর করোনাকালে ত্রাণ হিসেবে আলুর ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়া এবং মালয়েশিয়া, নেপালসহ বিভিন্ন দেশে আলুর রপ্তানি বাড়ার কারণে দেশে সংকট দেখা দিয়েছে।
চাক্তাইয়ের আফরা ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী মো. আলাউদ্দিন বলেন, বাজারে আলুর সংকট দেখা দেয়ায় দাম বাড়ছে। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। এছাড়া আলুর চাহিদা সব সময়ই থাকে। চাহিদার সাথে সরবরাহের ঘাটতিও দাম বাড়ার অন্যতম কারণ।
এদিকে নগরীর কাজীর দেউড়ির খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর দাম কেজিতে ৮ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়। খুচরা বিক্রেতা মিজানুর রহমান জানান, আড়তদারা জানিয়েছেন, বাজারে আলুর সংকট আছে। সামনে আরো দাম বাড়তে পারে। তাই আমরা এক সাথে ২ বস্তা কিনে এনেছি। সাধারণ মানুষের কাছে আলুর চাহিদা সব সময়ই থাকে।
বেসরকারি চাকরিজীবী মো. ইলিয়াস উদ্দিন বলেন, বাজারে প্রত্যেক সবজির দাম চড়া। একমাত্র ২০-৩০ টাকা দরে আলু পাওয়া যেতো। এখন সেটিও আকাশচুম্বি। এভাবে মানুষের জীবনযাপনের ব্যয় বাড়লে পরিবার চালাতে হিমশিত খেতে হবে।