দীর্ঘ দিন পর আবার মাঠে গড়াচ্ছে জাতীয় ক্রিকেট লিগের টি–টোয়েন্টি ভার্সন। আজ সিলেট ক্রিকেট স্টেডিয়াম এবং আউটারে একযোগে শুরু হবে এই টুর্নামেন্ট। ২০১০ সালের পর আবার মাঠে গড়াচ্ছে এই টুর্নামেন্ট। এই টুর্নামেন্টের ফেরাটাকে স্মরণীয় করতে নানা অনুষ্ঠান করছে বিসিবি। ঢাকায় বর্ণিল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ট্রফি উন্মোচনের পর গতকাল টুর্নামেন্টের ভেন্যু সিলেটে হয়ে গেল ক্যাপ্টেনস মিট। যেখানে দল গুলো তাদের পূর্ণাঙ্গ স্কোয়াড প্রকাশ করেছে আনুষ্ঠানিকভাবে। একই সাথে নিজেদের লক্ষ্যের কথাও জানিয়ে দিয়েছে। সব মিলিয়ে বেশ জাঁকালোভাবেই টুর্নামেন্ট আয়োজন করছে বিসিবি। টি–টোয়েন্টিতে নতুন প্রতিভা তুলে আনার জন্য শুধু দেশি ক্রিকেটারদের নিয়ে নতুন আঙ্গিকে জাতীয় লিগ টি–টোয়েন্টি শুরু করতে যাচ্ছে বিসিবি। স্বীকৃত টি–টোয়েন্টি ম্যাচ হিসেবেই বিবেচিত হবে এই টুর্নামেন্টের ম্যাচগুলি। যেটির মানে, টুর্নামেন্টের সবকিছুই থাকবে রেকর্ডে। এর আগে ২০১৯ ও ২০২১ সালে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেও ছিল টি–টোয়েন্টি সংস্করণ। এছাড়াও ২০১৩ সালে বিজয় দিবস টি–টোয়েন্টি, ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধু টি–টোয়েন্টি কাপ আয়োজন করে বিসিবি। ২০০৯ ও ২০১০ সালে পোর্ট সিটি ক্রিকেট লিগ নামেও একটি টি–টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট হয়। কোনোটিই এক–দুই আসরের বেশি স্থায়ী হয়নি। এবার বিসিবির আশা, এখন থেকে নিয়মিত এনসিএল টি–টোয়েন্টি আয়োজনের মাধ্যমে বিপিএলে তো বটেই, আন্তর্জাতিক মঞ্চেও ভালো করার জন্য নিজেদের তৈরি করতে পারবেন দেশের ক্রিকেটাররা। জাতীয় ক্রিকেট লিগের চার দিনের সংস্করণের আট দলই খেলবে এনসিএল টি–টোয়েন্টিতে। সাত বিভাগীয় দল ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, রংপুর, খুলনা ও বরিশালের সঙ্গে অংশ নেবে ঢাকা মেট্রো। ২০১০ সালে ছয় দলের জাতীয় লিগ টি–টোয়েন্টির ফাইনালে কিংস অব খুলনাকে হারিয়ে ট্রফি ঘরে তুলেছিল রাজশাহী রেঞ্জার্স। সেবার প্রতি দলে দুজন করে বিদেশি ক্রিকেটার খেলানোর সুযোগ ছিল। আট দলের অংশগ্রহণে রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে হবে এনসিএল টি–টোয়েন্টি। প্রতিটি দল পরস্পরের বিপক্ষে খেলবে একটি করে ম্যাচ। লিগ পর্বের সাত ম্যাচ করে খেলার পর পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ চার দল পাবে প্লে–অফের টিকেট। বিপিএলের মতোই ফাইনালের প্রথম দল বেছে নিতে টেবিলের শীর্ষ দুই দল নিয়ে হবে প্রথম কোয়ালিফায়ার। তৃতীয় ও চতুর্থ দল খেলবে এলিমিনেটর ম্যাচ। পরে এলিমিনেটর জয়ী ও প্রথম কোয়ালিফায়ারে হেরে যাওয়া দল খেলবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার। ওই ম্যাচের জয়ী দল নামবে শিরোপার লড়াইয়ে। আজ থেকে শুরু হয়ে দুই সপ্তাহের ব্যাট–বলের লড়াই শেষ হবে আগামী ২৪ ডিসেম্বর। প্রথম পর্বের খেলা চলবে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ২১ ও ২২ ডিসেম্বর হবে প্রথম কোয়ালিফায়ার, এলিমিনেটর ও দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ ২৪ ডিসেম্বর। আট দলের দুই সপ্তাহের লড়াই শেষে চ্যাম্পিয়ন দল সুদৃশ্য একটি ট্রফির পাশাপাশি পাবে ২০ লাখ টাকা। রানার্স–আপ দলের জন্য থাকছে ১০ লাখ টাকা। এছাড়া টুর্নামেন্টের সেরা ক্রিকেটার ২ লাখ টাকা । প্রতি ম্যাচের সেরা ক্রিকেটার পাবেন ২০ হাজার টাকা। এনসিএল টি–টোয়েন্টি দিয়ে প্রায় সাত মাস পর স্বীকৃত ক্রিকেটে ফিরছেন তামিম ইকবাল। গত মে মাসে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের পর আর কোনো ধরনের ক্রিকেটে দেখা যায়নি তাকে। এবার চট্টগ্রামের হয়ে ৪–৫টি ম্যাচ খেলার কথা রয়েছে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের। এছাড়া ইনজুরির কারণে পুনর্বাসনে থাকা নাজমুল হোসেন শান্তকে দেওয়া হয়েছে রাজশাহীর অধিনায়কত্ব। তার অংশগ্রহণ নিয়ে কিছুটা সংশয় এখনও রয়ে গেছে। দল সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকালে তার খেলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে। এছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টি–টোয়েন্টি সিরিজের বাংলাদেশ দলে থাকলে মাঝপথেই এনসিএল ছেড়ে যেতে হবে জাতীয় দলের অধিনায়ককে।