এনবিআরের সংকট নিরসনে ৫ উপদেষ্টাকে নিয়ে কমিটি

আজাদী ডেস্ক | সোমবার , ৩০ জুন, ২০২৫ at ৪:৫৬ পূর্বাহ্ণ

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে তৈরি সংকট নিরসনে পাঁচজন উপদেষ্টার সমন্বয়ে একটি উপদেষ্টা কমিটি করেছে সরকার। গতকাল উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয় বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। কমিটির সদস্যরা হলেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন, পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। খবর বিডিনিউজের।

এনবিআরের সেবাকে অত্যাবশ্যকীয় ঘোষণার সিদ্ধান্ত : এনবিআর কর্মকর্তাকর্মচারীদের আন্দোলনের মধ্যে সংস্থাটির সেবাকে অত্যাবশ্যকীয় ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্‌তী সরকার। গতকাল বিকালে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের তরফে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, অতি জরুরি আমদানিরপ্তানি ও বৈদেশিক বাণিজ্যের কার্যক্রম চলমান রাখার জাতীয় স্বার্থে সরকার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন সকল কাস্টমস হাউস, আইসিডি, বন্ড কমিশনারেট এবং শুল্ক স্টেশনসমূহের সকল শ্রেণির চাকরিকে অত্যাবশ্যকীয় সার্ভিস ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর বলেছে, বাংলাদেশের বাজেট ব্যবস্থাপনায় উন্নয়নমুখী কার্যক্রম পরিচালনার সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা হলো দুর্বল রাজস্ব সংগ্রহ ব্যবস্থা। রাষ্ট্রের প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের রাজস্ব সংগ্রহ অনেক কম। এর মূল কারণ হলো আমাদের রাজস্ব আহরণ ব্যবস্থাপনার নানা দুর্বলতা, অনিয়ম ও দুর্নীতি। এ প্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকার সকল অংশীজনের পরামর্শ অনুযায়ী জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছে যে, রাজস্ব সংস্কারের কাজকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য কতিপয় কর্মকর্তাকর্মচারীবৃন্দ নজিরবিহীনভাবে গত ২ মাস ধরে দেশের ব্যবসাবাণিজ্য, আমদানিরপ্তানি এবং রাজস্ব আদায় কার্যক্রম অন্যায় ও অনৈতিকভাবে ব্যাহত করে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করে আন্দোলনের নামে চরম দুর্ভোগ তৈরি করেছে, যা সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য। সংস্কারের বিরোধিতা ছাড়াও অর্থ বছরের শেষ ২ মাসে তারা রাজস্ব আদায় কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করেছে। এই তথাকথিত আন্দোলন পরিকল্পিত ও দুরভিসন্ধিমূলক, যা জাতীয় স্বার্থ এবং নাগরিক অধিকারের চরম পরিপন্থি।

কর্মকর্তাকর্মচারীদের অনতিবিলম্বে কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার আশা করে, তারা আইনবিরোধী ও জাতীয় স্বার্থ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসবেন। অন্যথায় দেশের জনগণ ও অর্থনীতির সুরক্ষায় সরকার কঠোর হতে বাধ্য হবে।

এনবিআরের ৬ কর্মকর্তার তথ্যানুসন্ধানে দুদক : এনবিআরের ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির তথ্যানুসন্ধান শুরুর কথা বলছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। যে ছয়জনের বিরুদ্ধে তথ্যানুসন্ধান শুরুর কথা বলা হচ্ছে, তাদের পাঁচজনই এনবিআরের চলমান শাটডাউন কর্মসূচির নেতৃত্বে রয়েছেন।

তদন্তের মুখে পড়া ছয় কর্মকর্তা হলেন এনবিআরের সদস্য (আয়কর নীতি) এ কে এম বদিউল আলম, অতিরিক্ত কর কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি মির্জা আশিক রানা, যুগ্ম কর কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দীন খান, যুগ্ম কর কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সহসভাপতি মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, অতিরিক্ত কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাছান তারেক রিকাবদার ও অতিরিক্ত কমিশনার ও সংস্কার ঐক্য পরিষদের সদস্য সাধন কুমার কুন্ডু। এদের মধ্যে বদিউল আলম ছাড়া বাকি পাঁচজন এনবিআরের চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলনে সামনের সারিতে রয়েছেন।

দুদকের নথিতে বলা হয়েছে, এনবিআরের কতিপয় অসাধু সদস্য ও কর্মকর্তা কর ও শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে কর দাতাদের কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন। তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক ও নিজেদের লাভে করের পরিমাণ কমিয়ে দিতেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅবসরপ্রাপ্ত ভ্যাট কর্মকর্তার স্ত্রীর ৫ তলা ভবন ক্রোকের নির্দেশ
পরবর্তী নিবন্ধজামালখানে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা শিবু গ্রেপ্তার