ইএম ফরস্টার (১৮৭৯–১৯৭০)। ইংরেজ ঔপন্যাসিক, ছোটোগল্পকার, প্রাবন্ধিক, গীতিনাট্যকার। বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধের ব্রিটিশ সমাজ ও শ্রেণিবৈষম্য, লিঙ্গবৈষম্যের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি ও মনোভাব ফুটিয়ে তোলার জন্য ফরস্টারের শ্লেষাত্মক উপন্যাসগুলি তাঁকে খ্যাতি এনে দিয়েছে। তাঁর পুরো নাম এডওয়ার্ড মরগ্যান ফরস্টার। এডওয়ার্ড মরগ্যান ফরস্টারের জন্ম ১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দের ১লা জানুয়ারি লন্ডনে। ১৮৯৭ থেকে ১৯০১ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে কিংস কলেজ, কেমব্রিজ–এ পড়াশোনা করেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় পাঠ শেষে ভ্রমণপিপাসু পিতৃহারা ফরস্টার মায়ের সঙ্গে ভ্রমণে বের হন। মিশর, জার্মানি, ভারত সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন তাঁরা।
১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে চাকরি সূত্রে দ্বিতীয়বারের মতো ভারতে অবস্থান করেন ফরস্টার। পরবর্তী সময়ে লন্ডনে ফিরে রচনা করেন তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস ‘আ প্যাসেজ টু ইন্ডিয়া’। জীবদ্দশায় ফরস্টারের মাত্র পাঁচটি উপন্যাস প্রকাশিত হয়। তার মৃত্যুর অব্যবহিত পরে তথা রচনার প্রায় ষাট বছর বাদে প্রকাশিত হয় মরিশ। আর্কটিক সামার নামে তার সপ্তম উপন্যাসটি অসমাপ্তই থেকে যায়। তাঁর অন্যান্য উপন্যাসগুলোর মধ্যে রয়েছে: ‘হয়ার অ্যাঞ্জেলস ফিয়ার টু ট্রেড’, ‘দ্য লঙ্গেস্ট জার্নি’, ‘আ রুম উইথ আ ভিউ’, ‘হাওয়ার্ডস এন্ড’, ‘মরিশ’, ‘আর্কটিক সামার’ প্রভৃতি। ‘দ্য লাইফ টু কাম’ তাঁর ছোটগল্পের একটি সংকলন। চলচ্চিত্র চিত্রনাট্য: আ ডায়েরি ফর টিমোথি (১৯৪৫) এবং গীতিনাট্য লিখেছেন ‘বিলি বাড’ নামে। এছাড়া সাহিত্য সমালোচনা, আত্মজীবনী, ভ্রমণ সাহিত্য ও প্রবন্ধ সহ বহু রচনা বিশ্বসাহিত্যে তাঁকে বিশেষ মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছে।
ফরস্টারের উপন্যাসভিত্তিক উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র: আ প্যাসেজ টু ইন্ডিয়া (১৯৮৪– পরিচালনা জেমস আইভরি), আ রুম উইথ আ ভিউ (১৯৮৫– পরিচালনা জেমস আইভরি), মরিশ (১৯৮৭– পরিচালনা জেমস আইভরি), হোয়ার এঞ্জেলস ফিয়ার টু ট্রেড (১৯৯১– পরিচালনা চার্লস স্টারিজ), হাওয়ার্ডস এন্ড (১৯৯২– পরিচালনা জেমস আইভরি)। সাহিত্যকৃতীর স্বীকৃতি হিসেবে তিনি পেয়েছেন বেশকিছু পুরস্কার। তাঁর মধ্যে রয়েছে: ‘জেমস টেইক ব্ল্যাক’, ‘বেনসন মেডেল’, ‘নাইটহুড’, ‘অর্ডার অব দ্য কমপ্যানিওন অব অনার’, ‘ব্রিটিশ অর্ডার অব মেরিট’ উল্লেযোগ্য। তিনি ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই জুন মৃত্যুবরণ করেন।