বলা হয়ে থাকে বাংলাদেশ দলে সিনিয়র ক্রিকেটারদের বিদায় করার নানা প্রক্রিয়া চলছে। আর সে হিসেবেই এই বিশ্বকাপ শেষে দলের দুই সিনিয়র সদস্য মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং মুশফিকুর রহিম অবসরে চলে যেতে পারেন বলে মনে করছেন অনেকেই। তবে এই মতের সাথে এক হতে পারছেননা দলের প্রধান কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে। যদিও ফিটনেস সমস্যায় বিশ্বকাপ দলে নেই তামিম ইকবাল। আঙুলের ইনজুরির কারণে এক ম্যাচ বাকি থাকতে ছিটকে গেছেন সাকিব আল হাসান। তাই প্রায় নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, এই দুজনেরই ওয়ানডে বিশ্বকাপ অধ্যায় শেষ হয়ে গেছে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হতে পারে মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহর শেষ বিশ্বকাপ ম্যাচ। বাংলাদেশের প্রধান কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহে অবশ্য এই বিষয়ে সরাসরি কিছু বলতে চান না। মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ এখনও যেভাবে খেলে চলেছেন এবং যেভাবে ফিটনেস ধরে রেখেছেন তাতেই সন্তুষ্ট তিনি। পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে আজ শনিবার বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। প্রথম আট ম্যাচে দুটি জয় পাওয়া বাংলাদেশের সামনে আসছে ম্যাচে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির টিকেট নিশ্চিত করার সুযোগ। এর বাইরেও সার্বিক দিক বিবেচনায় মুশফিক, মাহমুদউল্লাহর কাছে এই ম্যাচের বাড়তি গুরুত্ব থাকার সম্ভাবনা প্রবল।
৩৬ পেরোনো দুই ক্রিকেটারের জন্য চার বছর পরের বিশ্বকাপ খেলার আশা করা খুব কঠিন। হাথুরুসিংহে এই বিষয়ে মন্তব্য না করে বরং মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর ফিটনেস ও পারফরম্যান্সের প্রশংসা করলেন। তিনি বলেণ বিশ্বকাপে তাদের যাত্রাটা দুর্দান্ত। বাংলাদেশের হয়েতো বটেই, ক্রিকেটার হিসেবে চারটি বিশ্বকাপ খেলা বিশেষ ব্যাপার। আমি জানি না, তারা নিজেদের শেষ বিশ্বকাপ খেলছে কিনা। সত্যি বলতে, তারা এখনও যথেষ্ট ফিট। তারা পারফর্মও করছে। তাই সিদ্ধান্ত তাদের। এটিই তাদের শেষ বিশ্বকাপ কিনা, এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারি না। চারটি কিংবা পাঁচটি বিশ্বকাপ খেলা দুর্দান্ত ব্যাপার। আমি আসলে বলতে চাচ্ছি, যারা এখন খেলছে বা খেলা শুরু করছে, তারা সবাই পাঁচটি বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন দেখে। মুশফিক–সাকিবরা বাংলাদেশ ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত এক যাত্রার সেরা ক্রিকেটার। তারা যদি থামার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে বাংলাদেশের ক্রিকেটে এটি যুগ পরিবর্তনের মতো বিষয় হবে।
চলতি আসরে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক মাহমুদউল্লাহ। ছয় ইনিংসে ১টি করে ফিফটি–সেঞ্চুরিতে ৫৯.২০ গড়ে তিনি করেছেন ২৯৬ রান। প্রথম তিন ম্যাচে দুটি পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস খেলা মুশফিকের ব্যাট হাসেনি সবশেষ চার ম্যাচে। আট ইনিংসে তার সংগ্রহ ২৫.৮৫ গড়ে ১৮১ রান। সব মিলিয়ে বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ২১ ইনিংসে ৫৩.৮৪ গড়ে মাহমুদউল্লাহর নামের পাশে ৯১২ রান। বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ৩টি সেঞ্চুরির মালিক তিনি। এর সঙ্গে আছে ৩টি ফিফটিও। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের সর্বোচ্চ গড়ও তার। আর বিশ্বকাপে পাঁচ আসরে মুশফিক এখন পর্যন্ত ৩৬ ইনিংসে ৩৫.২৬ গড়ে করেছেন ১ হাজার ৫৮ রান। ৮টি ফিফটির সঙ্গে গতবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিনি খেলেন ১০২ রানের অপরাজিত ইনিংস। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে ১ হাজার রান করা দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান মুশফিক। প্রথম জন সাকিব। তিনি করেছেন ১ হাজার ৩৩২ রান।