একাদশে শূন্য থাকছে ৪২ হাজার আসন

অনুমোদিত ২৭৫ কলেজে আসন সংখ্যা পৌনে ২ লাখ ।। ভর্তির জন্য আবেদন করেছে ১ লাখ ৩২ হাজার

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ৫ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৬:০৫ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীন বৃহত্তর চট্টগ্রামের ২৭৫টি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন রয়েছে। অনুমোদিত এসব কলেজের একাদশ শ্রেণির তিন বিভাগে (বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক) মোট আসন সংখ্যা ১ লাখ ৭৪ হাজার ৪৯টি (পৌনে দুই লাখ)। এসব আসনের বিপরীতে এবার সবমিলিয়ে আবেদন করেছে ১ লাখ ৩২ হাজার ১৯৫ শিক্ষার্থী। হিসেবে আবেদনকৃত সব শিক্ষার্থী ভর্তির পরও কলেজগুলোর একাদশ শ্রেণিতে আরো ৪২ হাজার (৪১ হাজার ৮৫৪টি) আসন শূন্য থাকছে এবার। শিক্ষাবোর্ডের কলেজ শাখা সূত্রে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। শিক্ষাবোর্ডের তথ্য মতে- কলেজগুলোর একাদশ শ্রেণির মোট পৌনে দুই লাখ আসনের মধ্যে বিজ্ঞানে আসন রয়েছে ৩৫ হাজার ৬২৪টি।

ব্যবসায় শিক্ষায় ৬৩ হাজার ৭৫৫, মানবিকে সর্বোচ্চ ৭৪ হাজার ৬২০টি এবং গার্হস্থ্য বিজ্ঞানে ৫০টি আসন রয়েছে। অন্যদিকে, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে এবার (২০২২ সালে) এসএসসি উত্তীর্ণ মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৩০ হাজার ৫৮ জন। এর মাঝে বিজ্ঞানে ২৯ হাজার ৩৮৯ জন, ব্যবসায় শিক্ষায় ৫৪ হাজার ৬৭১ এবং মানবিকে ৪৫ হাজার ৯৫৩ জন শিক্ষার্থী পাস করেছে। তিন বিভাগে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৩০ হাজার ১৩ জন। তবে পুনঃনিরীক্ষায় আরো ৪৫ জন শিক্ষার্থী নতুন করে পাস করে। সবমিলিয়ে উত্তীর্ণ শিক্ষার্র্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার ৫৮ জন। যদিও কলেজের একাদশে ভর্তিতে আবেদন করেছে ১ লাখ ৩২ হাজার ১৯৫ জন।

বোর্ডের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, তিন বিভাগেই উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর তুলনায় আসন সংখ্যা বেশি। সবচেয়ে বেশি আসন রয়েছে মানবিকে। তবে তুলনামূলক কম আসন থাকলেও বিজ্ঞানে অন্তত ১৫ হাজার আসন শূন্য থাকছে এবার। এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর জাহেদুল হক আজাদীকে বলেন, বিজ্ঞানে ৩৫ হাজারের বেশি আসন থাকলেও এবার পাস করেছে ২৯ হাজারের কিছু বেশি।

তবে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উত্তীর্ণদের মধ্যেও অনেকে অন্য বিভাগে ভর্তি হয়ে থাকে। বিজ্ঞান থেকে পাস করলেও একাদশে গিয়ে মানবিকে ভর্তির প্রবণতা বেশি দেখা যায়। প্রতিবারই এমন ঘটছে। সে হিসেবে কলেজগুলোর একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগে এবার বড় জোর ২০ হাজারের মতো শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারে। এর ফলে বিজ্ঞানের অন্তত ১৫ হাজার আসন শূন্য থাকতে পারে এবার। আর শিক্ষার্থীর তুলনায় আসন বেশি থাকায় স্বাভাবিক ভাবে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষায়ও প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার করে আসন শূন্য থাকবে।

শিক্ষাবোর্ড সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের কলেজগুলোতে বিজ্ঞানে ভর্তিতে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ কম। যদিও মানবিকে অতিরিক্ত চাপ। কিন্তু বিজ্ঞানে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী পাওয়া যায় না। দেখা যায়, কলেজের বিজ্ঞান বিভাগে দুইশ আসন থাকলেও শিক্ষার্থী ভর্তি হচ্ছে মাত্র ১০ জন। অন্যদিকে, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের চাপ বেশি। বিশেষ করে মানবিকে আসন সংকট দেখা দেয়।

তবে শহরের চিত্র কিছুটা ভিন্ন দাবি করে কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর জাহেদুল হক বলেন, অবশ্য মহানগরের প্রথম সারির কলেজগুলোতে বিজ্ঞানে ভর্তির জন্য রীতিমতো যুদ্ধ অবস্থা। তবে মানের দিক দিয়ে পিছিয়ে থাকা মহানগরের বেসরকারি কলেজগুলোতেও শিক্ষার্থীদের আগ্রহ কম থাকে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও বিজ্ঞান শাখায় আসন শূন্য থেকে যায়। সার্বিক ভাবে ৪০ হাজারের বেশি আসন শূন্য থাকছে জানিয়ে কলেজ পরিদর্শক বলেন, গ্রামাঞ্চলের এবং মানের দিক থেকে পিছিয়ে থাকা মহানগরের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এসব আসন শূন্য থাকবে বলে আমাদের ধারণা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅগ্নিসন্ত্রাসের সাহস যেন আর কেউ না পায়
পরবর্তী নিবন্ধদিন-দুপুরে মুখোশধারীদের হামলা, দুই ভাই গুলিবিদ্ধ