উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তির প্রথম ধাপের ফল প্রকাশ করা হয়ছে ৩১ ডিসেম্বর। এ ধাপে ১৩ লাখ ৫৭ হাজার ৬৪৬ জন আবেদন করে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছেন ১২ লাখ ৭৮ হাজার ১১৪ জন। আবেদন করেও ৭৯ হাজার ৫৩২ জন পছন্দের কলেজে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়নি। তার মধ্যে ২৩ হাজার ২৩১ জন জপিএি-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীও রয়েছেন!
তাই ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির প্রথম মেধাতালিকা প্রকাশের পর অনেক শিক্ষার্থীর মুখে হাসি ফুটলেও একাংশ ভুগছে হতাশায়। কেননা প্রতিবছরের মত এবারও নগরীর খ্যাতিমান সরকারী কলেজগুলোতে জিপিএ-৫ প্রাপ্তরাই ঠাঁই করে নিয়েছে।
বিশেষ করে নগরীর সরকারী কলেজ সমূহের বিজ্ঞান শাখায় মোট ৩৫০০ আসনের বিপরীতে প্রায় ৭৫,০০০ আবেদন যাচাই বাছাই করে প্রকাশিত এই ফলাফলে হাজারো শিক্ষার্থীর স্বপ্নভংগ হয়েছে! এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পাওয়া প্রায় ৮,০০০ বিজ্ঞান শিক্ষার্থী সরকারি কোন কলেজের তালিকায় আসেনি। অপরদিকে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত বেশ কিছু শিক্ষার্থী কোন কলেজের জন্যই মনোনীত হয়নি। মেধাতালিকায় অনেকে মনোনীত হয়েছে এমন সব কলেজে যেখানে শিক্ষার পরিবেশ মানসম্পন্ন নয় বলে ভাবছেন অভিভাবকবৃন্দ।
এই অনিশ্চয়তা এড়াতে একাদশে ভর্তিতে অনলাইনে আবেদনের ক্ষেত্রে সর্বনিন্ম ৫টি এবং সর্বোচ্চ ১০টি কলেজের পছন্দক্রম দিয়ে আবেদন করার সুযোগ থাকায় সর্বোচ্চ দশটি কলজে পছন্দক্রম দিয়ে আবদেন করার পরার্মশ আবারও দিয়েছেন শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর জাহদেুল হক।
অনেক শিক্ষার্থী অতি আত্মবিশ্বাসের জোরে মাত্র কয়েকটি বা ৫টি কলজে পছন্দক্রম দিয়ে আবদেন করেছে। কিন্তু দেখা গেলো তার প্রাপ্ত নম্বরে ওই ৫টি কলেজের কোনটিতেই সে ভর্তির সুযোগ পেলোনা। এছাড়া পছন্দক্রমে আর কলেজ না থাকায় পরবর্তী তালিকাতেও তার আসার সুযোগ থাকেনি। এতে করে জিপিএ-৫ পেয়েও কিছু শিক্ষার্থীর ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরী হয়েছে বলে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে কাঙ্ক্ষিত কলেজে সুযোগ না পেয়ে হতাশায় মুষড়ে পড়া শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দের প্রতি দিকনির্দেশনামূলক এক সভার আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজ। এতে নগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষাবিদ, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকগণ যুক্ত হয়ে একাদশে ভর্তি বিষয়ক নানা সমস্যা ও সমাধানকল্পে আলোকপাত করেন।
আলোচনায় শিক্ষার্থীদের হতাশ না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের জন্য নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ জাহেদ খান। তিনি বলেন, প্রথম আবেদনে কলেজ পছন্দক্রম নির্বাচনে এসএসসিতে শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত গ্রেড পয়েন্ট বিবেচনায় না রাখা, কলেজের শিক্ষা পরিবেশ ও মান এবং বাসা থেকে দূরত্ব ইত্যাদি বিবেচনায় না আনার কারণে এই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে! তাই ২য় আবেদনে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। না বুঝে পছন্দক্রম না দিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় বিবেচনা করে দ্বিতীয় ধাপে আবদেন করা হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
কোনো শিক্ষার্থীকে দ্বিতীয় আবেদনের আগে বিবেচনা করতে হবে সে কত নম্বর পেয়েছে। না হয় আবারও ফল বিপর্যয় ঘটতে পারে। তিনি আরও বলেন, সরকারী কলেজে পড়ার সুযোগ না পেলেও উন্নততর শিক্ষা পরিবেশ, নিয়মিত ক্লাস গ্রহণ, মাল্টিমিডিয়া প্রযুক্তির মাধ্যমে ক্লাসনির্ভর পাঠদান, মেধাবী শিক্ষকগণের তৈরী হ্যান্ডনোট, ছাত্রছাত্রীদের নিবিড় পরিচর্যা, দ্রুত সিলেবাস সমাপন ইত্যাদি ব্যতিক্রমী পাঠপদ্ধতি সম্পন্ন প্রাইভেট কলেজ চট্টগ্রামে রয়েছে। তাই মেধাতালিকায় আসা কলেজ কারো পছন্দ না হলে শিক্ষার্থী ঐ কলেজে ভর্তি নিশ্চয়ন করবেনা। ফলে সে ৯ ও ১০ জানুয়ারি পুনরায় আবেদন করতে পারবে এবং পছন্দক্রমে যে কলেজের নাম প্রথমদিকে রাখবে, সে কলেজেই ভর্তি হতে পারবে।
এক্ষেত্রে চট্টগ্রামের সচেতন অভিভাবকমহলের আস্থা অর্জনকারী চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড ও শিক্ষামন্ত্রণালয় অনুমোদিত চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজ (EIIN-১৩৪৭৮০) হতে পারে অন্যতম পছন্দ।
চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজে এসএসসি-তে জিপিএ ৪.৫ পাওয়া শিক্ষার্থী ভর্তি হয়ে এইচএসসি-তে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হচ্ছে! ২০২১সালে ৩৯ জন এ+ সহ এপর্যন্ত মোট ১৪৯০ জন এই কলেজ থেকে এ+/এ অর্জন করেছে।
অতিরিক্ত ক্লাসের মাধ্যমে থাকে জিপিএ বৃদ্ধির জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা। এখান থেকে পাশ করে মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার গৌরব অর্জন করছে প্রতিবছর। অতএব সরকারী বেসরকারী মুখ্য বিষয় নয় নিয়মিত ক্লাস করলে এবং মনেযোগী হলে প্রাইভেট কলেজ থেকেও ভালো ফলাফল করা সম্ভব।
উল্লেখ্য, প্রথম র্পযায়ে নির্বাচিতদের ভর্তি নিশ্চায়নের শেষে ৯ থেকে ১০ জানুয়ারি রাত ৮টা পর্যন্ত ২য় পর্যায়ের আবেদন গ্রহণ করা হব। ২য় পর্যায়ের আবেদন গ্রহণ শেষে ১২ জানুয়ারি রাত ৮টায় প্রথম পর্যায়ের মাইগ্রেশনের ফল ও ২য় র্পযায়ে মনোনীতদের ফল প্রকাশ করা হবে।