একাকীত্ব মানুষের জীবনে এক কঠিন অভিশাপ। দেশের খ্যাতনামা ব্যক্তিবর্গ ছাড়া ও পরিচিত মহলে অনেক মানুষের মৃত্যুর পরে তাদের জীবনের নিঃসঙ্গতা ও অসহায়ত্বের যে করুণ কাহিনী উঠে আসে তা খুবই বেদনাদায়ক। প্রকৃতপক্ষে এটি আমাদের ভঙ্গুর পরিবারিক কাঠামো ও ঘুনে ধরা সমাজেরই প্রতিচ্ছবি। বর্তমানে যা খুবই পরিচিত একটি চিত্র। পরিবারের অভিভাবক সামর্থ্যের সবটুকুই সন্তান ও সংসারের জন্য উজাড় করে দেন। জীবন সায়াহ্নে এসে এমন মানুষের প্রয়োজন প্রিয়জনের সান্নিধ্য, চিকিৎসা সেবা, একটু প্রশান্তির ছোঁয়া, কেউ একজন পাশে থাকার মানসিক শক্তি ও সাহস, মৃত্যুর পর কেউ তাকে স্মরণ করে দুফোঁটা চোখের জল ফেলবে এমন বিশ্বাস। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় জীবনের শেষ দিনগুলোতে একটু কথা বলা বা সঙ্গ দেবার মত কোন আপনজনের দেখা মেলে না। সন্তানেরা হয়ত সাফল্য নামক সোনার হরিণ বা উন্নত জীবনের খোঁজে আছে দূরদেশে কিংবা দেশে থাকলেও সম্পর্কগুলো হয়তো মৃত। এমন পরিস্থিতিতে তীব্র মানসিক কষ্ট আর হাহাকারকে সঙ্গী করে মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। হায়রে জীবন! কী অসহনীয় জীবনের এই পরিসমাপ্তি!