একদিনে রাজস্ব আয় ৩০ লাখ টাকা

কাপ্তাই হ্রদ মাছ আহরণ ১৬০ মেট্রিক টন

রাঙামাটি প্রতিনিধি | শুক্রবার , ১৯ আগস্ট, ২০২২ at ৭:৩৫ পূর্বাহ্ণ

রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদ থেকে ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে মৎস্য আহরণ থেকে রাজস্ব আয় করা হয়েছে ১১ কোটি ৬৮ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। এর মধ্যে ১৭ হাজার ৮৭০ মেট্রিক টন মাছ আহরণ করা হয়। ২০২২ সালে পোনা অবমুক্ত করা হয়েছে ৬০ মেট্রিক টন ৩২২ কেজি। কাপ্তাই হ্রদের ৪টি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র থেকে ২০২১-২২ অর্থ বছরে এ রাজস্ব আদায় করা হয়। এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার একদিনে মাছ আহরণ করা হয়েছে ১৬০ মেট্রিক টন। এতে প্রায় ৩০ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় করা হয়। রাঙামাটি বিএফডিসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গতকাল দুপুরে ফিসারী ঘাটে সরেজমিনে দেখা যায়, দীর্ঘ সাড়ে ৩ মাস পর মৎস্য অবতরণ ঘাটটিতে এখন ব্যাপক কর্মচাঞ্চল্যতা। শ্রমিকরা ব্যস্ত একের পর এক বরফ ভাঙ্গতে। অবতরণকৃত মাছ সরকারি রাজস্ব মিটিয়ে ড্রামে প্যাকিং শেষে ট্রাকে তুলে দেয়া হচ্ছে। কাপ্তাই হ্রদের এই মাছ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পৌঁছে যাবে। এদিকে, রাঙামাটির ফিসারীর মৎস্য শ্রমিক মো. খোরশেদ বলেন, দীর্ঘ তিনমাস ১৭ দিন পর আমরা আবার কাজে ফিরে আসছি। খুবই ভালো লাগছে। আবারো আর্থিক সংকট থেকে মুক্তি পাবো। মৎস্য শ্রমিক গোপাল দাশ বলেন, আমরা এতদিন খুবই কষ্টে দিন যাপন করেছি ফিসারী বন্ধ থাকায়। আজকে থেকে মাছ ধরার অনুমতি দেয়ায় আমাদের জন্য ভালো হয়েছে।
এদিকে, মাছ ব্যবসায়ী মো. মাহফুজ উদ্দিন বলেন, আজকে মাছ আসছে প্রচুর কিন্তু মাছের সাইজ খুবই ছোট। এটা বাজারজাত করা যাবে না। আমরা যদি বাজারজাত করিও অর্ধেক মূল্য পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, প্রতি কেজি মাছে ১৮-২০ টাকা খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। মাহফুজ বলেন, সরকার আমাদের কাছ থেকে রাজস্ব নিয়ে নিচ্ছে কিন্তু বাজারে যদি দাম না পায় তাহলে আমরা মাছ ব্যবসায়ী এবং জেলেরা উভয়ই ক্ষতির সম্মুখীন হব।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) রাঙামাটি বিপণন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক লে. কমান্ডার মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, কাপ্তাই হ্রদে প্রথমের দিকে জালে কিছু ছোট মাছ আসতে থাকে। আশাকরি তা দ্রুত এটা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার একদিনে ১৬০ মেট্রিক টন মাছ আহরণ হয়েছে হ্রদ থেকে। এতে প্রায় ৩০ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় করা হয়েছে। লে. কমান্ডার মো. তৌহিদুল ইসলাম এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমাদের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রগুলোতে ছোট মাছগুলো বেশি আসে এবং বড় মাছগুলো স্থানীয় বাজারে চলে যায়। বড় মাছগুলো এখানে আসলে আরো রাজস্ব বাড়তো।
প্রসঙ্গত, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ কৃত্রিম জলাধার বলা হয় রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদকে। প্রায় ৭২৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের কাপ্তাই হ্রদটি রাঙামাটির আট উপজেলা ও খাগড়াছড়ির দুই উপজেলা নিয়ে গঠিত। মূলত ষাটের দশকে রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায় কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে এই হ্রদের সৃষ্টি হলেও বর্তমানে মিঠা পানিতে মৎস্য উৎপাদন ও সরকারের রাজস্ব আদায়ে ভূমিকা রাখছে এই হ্রদটি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমৃদু তাপপ্রবাহেও অসহনীয় গরম
পরবর্তী নিবন্ধমহেশখালীতে বকেয়া বেতনের দাবিতে এসপিএম প্রকল্পের শ্রমিকদের বিক্ষোভ