দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির ধারায় ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যায় একদিনের মাথায় নতুন রেকর্ড হয়েছে। শনাক্তের হার ছাড়িয়েছে ২৩ শতাংশ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৬ হাজার ৮৩০ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। মৃত্যু হয়েছে আরও ৫০ জনের।
নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৬ লাখ ২৪ হাজার ৫৯৪ জনে। তাদের মধ্যে মোট ৯ হাজার ১৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। একদিনে শনাক্ত রোগীর এই সংখ্যা দেশে মহামারী শুরুর পর থেকে সর্বোচ্চ। বাংলাদেশে গত বছর ৮ মার্চ করোনার প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার এক বছর পর সোমবার প্রথমবারের মতো একদিনে ৫ হাজারের বেশি নতুন রোগী শনাক্তের খবর আসে। তার মধ্য দিয়ে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছয় লাখ ছাড়িয়ে যায়। তিন দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছয় হাজার ছাড়িয়ে যায়। খবর বিডিনিউজের।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে করোনায় প্রথম মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছিল সরকার। এ বছর ৩১ মার্চ তা নয় হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৩০ জুন একদিনে ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা একদিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু। সেই সংখ্যা এখনও না ছাড়ালেও গত তিন দিন ধরে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ৫০ এর ঘরে রয়েছে। টানা কয়েকদিন ধরে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হারও বেড়ে ২৩ দশমিক ২৮ শতাংশ হয়েছে, যা গত ৬ আগস্টের পর সর্বোচ্চ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে গত একদিনে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ২ হাজার ৪৭৩ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৪১১ জন হয়েছে।
বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১৩ কোটি ৩ লাখ পেরিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৮ লাখ ৪২ হাজার। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩৪তম স্থানে আছে বাংলাদেশ। মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৪০তম অবস্থানে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে মোট ২২৬টি ল্যাবে ২৯ হাজার ৩৩৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ২৮ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ২১ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
গত একদিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৪০ জন পুরুষ আর নারী ১০ জন। তাদের মধ্যে ১ জন বাড়িতে মারা গেছেন। বাকিদের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে। তাদের মধ্যে ৩২ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ১১ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৪ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ২ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল। মৃতদের মধ্যে ৩৬ জন ঢাকা বিভাগের, ৭ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ২ জন রাজশাহী বিভাগের, ৩ জন খুলনা বিভাগের এবং ২ জন সিলেট বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৯ হাজার ১৫৫ জনের মধ্যে ৬ হাজার ৮৮৭ জনই পুরুষ ও ২ হাজার ২৬৮ জন নারী।