কলকাতার আকাশে গতকাল সকাল থেকে ছিল মেঘের আনাগোনা। দুপুরের দিকে দু এক ফোটা বৃষ্টিও পড়েছিল। তবে তা বাংলাদেশের অনুশীলনে ব্যাঘাত ঘটাতে পারেনি। শুধু তাই নয় কলকাতার আবহাওয়ার যে পূর্বাভাস তাতে আজ বৃষ্টিরও কোন সম্ভাবনা নেই। তাই নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশ। ম্যাচের আগের দিন বাংলাদেশ দল দুপুর দুইটা থেকে অনুশীলন করেছে। আজ এবারের বিশ্বকাপে দ্বিতীয় জয়ের আশায় মুখোমুখি হবে নেদারল্যান্ডসের। এবারের বিশ্বকাপে এই নেদারল্যান্ডস কিন্তু বিস্ময় জাগানো এক দল। কারন এই দলটি হারিয়ে দিয়েছিল উড়তে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকাকে। তবে এরপর আর জয়ের মুখ দেখেনি নেদার্যলান্ডসও। একের পর এক হেরেই চলেছে। একই দশা বাংলাদেশেরও। সেই যে প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জিতেছিল এরপর আর জয়ের মুখ দেখেনি। টানা চার ম্যাচে হেরেছে। তাই ষষ্ঠ ম্যাচে এসে দ্বিতীয় জয় তুলে নিতে মরিয়া টাইগার বাহিনী। ক্রমাগত হারতে থাকা একটি দলের অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে এখন বাংলাদেশকে প্রতিপক্ষ হিসেবে গণনায় আনতে হচ্ছে নেদারল্যান্ডসকেও।
আত্মবিশ্বাসের কতটা তলানিতে চলে গেলে এমন অবস্থা হয় সেটা বুঝাই যাচ্ছে। তাই এই ম্যাচে জয় ছাড়া আর কিছু ভাবতে চায় না বাংলাদেশ। মুম্বাইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ শেষে ঢাকায় ফিরে গিয়েছিলেন সাকিব। তিনিও ফিরেছেন গতকাল। ইডেনে অনুশীলনও করেছেন সাকিব। দলের বাকিরাও অনুশীলন করেছেন দুপুরের রোদে। লক্ষ্যটা পরিষ্কার বাংলাদেশ দলের। তা হচ্ছে জয় তুলে নেওয়া। এর বাইরে আর কিছু ভাবারও সুযোগ নাই টাইগারদের। তবে বরাবরের মত সেই একটাই সমস্যা উঁকি দিচ্ছে। তা হচ্ছে দলের টপ অর্ডারের ব্যাটাররা রান পাবে কিনা। এবারের বিশ্বকাপ চলছে ব্যাটারদের বিশ্বকাপ। আর সেখানেই ব্যর্থ বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ওপেনার তানজিদ তামিম, লিটন দাশ, সাকিব আল হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম কারো ব্যাটে নেই প্রত্যাশিত রান। যে কারনে এখনো বড় কোন স্কোর গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। আর বড় রান ছাড়া যে এবারের বিশ্বকাপে ম্যাচ জেতা কঠিন সেটা বেশ ভালই বুঝতে পারছে টাইগাররা। কিন্তু আসল কাজটা হচ্ছে না। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারের পর সাকিবও বলেছিলেন দলের টপ অর্ডারকে রান করতে হবে। কিন্তু কেউ জানে না কবে সেই রান করবে টাইগার ব্যাটাররা। অন্তত আজ নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের ব্যাটাররা রান করবেন তেমন আশা টাইগার পেসার তাসকিন আহমেদের।
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন আসলে সময় যখন খারাপ যায় তখন সবার একসাথে যায়। যেমনটি আমাদের যাচ্ছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি। কিন্তু সে চেষ্টা যখন কাজে আসে না তখন সমালোচনা সইতেই হয়। তবে একটি ম্যাচ জিতলে সব ঠিক হয়ে যাবে। দল আবার ছন্দে ফিরবে বলেও মনে করেন এই পেসার। আজকে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জয় না পাওয়ার কোন কারণ দেখেন না তিনি। যদিও এই নেদারল্যান্ডসের কাছেও একবার হেরেছে বাংলাদেশ। সেটাও খুব বেশি দিন আগের কথা নয়। ২০১০ সালে দু’দলের প্রথম মোকাবেলায় বাংলাদেশকে ৬ উইকেটে হারিয়েছিল নেদারল্যান্ডস। যদিও পরের বছর বিশ্বকাপে বাংলাদেশ সে হারের প্রতিশোধ নিয়েছিল। ৬ উইকেটে জেতা সে ম্যাচে খেলেছিলেন আজকের দলের সাকিব, মুশফিক এবং মাহমুদউল্লাহ। তাই এদের অবশ্যই সে ম্যাচের স্মৃতি মনে থাকবে। আর সে স্মৃতিকেও নিশ্চয়ই কাজে লাগাতে চাইবে টাইগার দলের এই তিন সিনিয়র সদস্য। এবারের বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসও হেরেছে চারটি ম্যাচ। তবে তারা হারলেও বড় বড় স্কোর গড়েছে। তাই এই দলটি যে বাংলাদেশ দলের পরীক্ষা নেবে সেটা বলাই যায়। এছাড়া দলটির সাথে রয়েছে বাংলাদেশের সাবেক ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুক। তিনিও বাংলাদেশ দলের দুর্বলতা সম্পর্কে বেশ ভালই ওয়াকেবহাল আছেন। কাজেই সেটাকেও কাজে লাগাতে চাইবে ডাচরা। তবে বাংলাদেশ কোন কিছুতেই ছাড় দিতে চায় না। জয় ছাড়া আর কিছু ভাবতেই চায় না টাইগাররা। তাই দ্বিতীয় জয় নিয়ে আজ আবার ছন্দে ফিরবে টাইগাররা সেই প্রত্যাশা সবার। কারণ একটি জয়ই এই মুহূর্তে বাংলাদেশ দলের জন্য সবচাইতে বেশি দরকার। বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়াইটায় শুরু হবে ম্যাচটি।