একটি আদর্শ গ্রামের স্বপ্ন

এম. শাহেদ সারওয়ার | রবিবার , ২ মার্চ, ২০২৫ at ৬:০৯ পূর্বাহ্ণ

একটি গ্রাম একটি নির্দিষ্ট সংঘবদ্ধ জনগোষ্ঠীর সমাবেশ। গ্রামের সকল নাগরিকের স্বপ্ন নিজ গ্রামকে যেন প্রাকৃতিক সুন্দরে ঘেরা, আদর্শ আর মায়া মমতায় ভরা, ঐতিহ্য আর সংস্কৃতিতে আবহমান সকলের মাঝে বিরাজমান প্রিয় একটি আদর্শ গ্রামে গড়ে তোলা। যেখানে উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তের মত সব ধরনের লোকের বসবাস হবে। আর এই বসবাসের জন্য কিংবা বেঁচে থাকার জন্য যেসব উপকরণ প্রয়োজন, তা না পেয়ে অনেকেই হয়তো অত্যন্ত সংগ্রামের মাধ্যমে জীবনধারণ করছে। অনেকেই হয়তো দুর্বিষহ বা মানবেতর জীবনযাপন করছে। তারপরও এরূপ ব্যক্তিবর্গ হাসিআনন্দ, দুঃখকষ্ট ও আনন্দবিনোদনের মাধ্যমে পৃথিবী সৃষ্টির শুরু থেকেই সমাজবদ্ধভাবে বসবাস করে আসছে। আমরা বলি অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা মানুষের মৌলিক অধিকার। এরূপ মৌলিক অধিকার বা চাহিদাগুলো পূরণ করা সমাজ, দেশ ও জাতির অপরিহার্য কর্তব্য। কিন্তু অতিব দুঃখের সাথে বলতে হয়, দরিদ্রতা, অচেনতার কারণে হোক আর দুর্নীতিবাজদের কারণেই হোক, দেশ এসব চাহিদার মধ্যে সব ধরনের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। ফলে গ্রাম ও সমাজের অবস্থা ভালো থাকছে না। উপরিউক্ত মৌলিক চাহিদাগুলোর মধ্যে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান এর কিছুটা চাহিদা পূরণ হলেও শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থা খুবই খারাপ অবস্থায় দাঁড়াচ্ছে। ফলে গ্রামবাসী শিক্ষা চিকিৎসা ব্যবস্থার দিক থেকে দারুণ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। যা অত্যন্ত কষ্টের বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এসব ভোগান্তির শিকার আর কতদিন? এজন্য আমাদের থেমে থাকলে চলবে না। গ্রামের সচেতনরা যে যেখানে বসবাস করি না কেন সকলে পরিশ্রম, ত্যাগ তিতিক্ষা এবং সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যেমন জীবনযাপন করছি, ঠিক তেমনি পরিশ্রম, ত্যাগ তিতিক্ষা এবং সংগ্রামের মধ্য দিয়েই একটি আদর্শ গ্রাম তৈরির পরিকল্পনা করতে হবে। যাতে ঐ গ্রামবাসীকে যে কোন মৌলিক চাহিদার জন্য অন্য কোন গ্রামে ও প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য অন্য কোথাও বা শহরে যেতে না হয়। একটি আদর্শ গ্রামের অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধার সৃষ্টির জন্য প্রয়োজনে গ্রামের সচেতন প্রবাসী ও যুবকসমাজকে দায়িত্ব নিলে যে কোন অবহেলিত গ্রামকে একটি আদর্শ গ্রামে রূপান্তর করা মোটেই কঠিন কাজ নয় শুধু দরকার একটু আন্তরিকতার।

একটি আদর্শ গ্রাম গঠনের জন্য গণসেচেনতা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করার চেষ্টা করতে হবে। এতে শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হবে এছাড়া বেকারত্বও অনেকাংশে দূর হবে। গ্রামের ছেলেমেয়েদের জন্য থাকবে মুক্ত জ্ঞান চর্চার পাঠাগার। সেখানে ছেলেমেয়েরা দেশের ইতিহাস, দেশের আইনকানুন, ভৌগোলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়, ধর্মীয় রীতিনীতি প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করবে। আর বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে গ্রামে কম্পিউটার শিক্ষা কার্যক্রম বা প্রশিক্ষণ ও যুব সমাজের মধ্যে আইনি সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন আইন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এভাবে সামষ্টিক উপায়ে ও কৌশলে আমরা দেশ ও গ্রামের কল্যাণে অনেক কিছুই করা যেতে পারে। গ্রামের প্রবাসী, যুব সমাজ ও তরুণ প্রজন্মকে এই শক্তির ওপর দাঁড়াতে হবে। তাদের জাগতে হবে ও অন্যকে জাগাতে হবে যাতে সুন্দর একটি আদর্শ গ্রামে রূপান্তর করে গ্রামের সকলের জন্য মঙ্গল বয়ে আনে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিটিভি, চট্টগ্রাম কেন্দ্রে চট্টগ্রামের আউটডোরের অনুষ্ঠানগুলো নিয়মিত সম্প্রচার করা হোক
পরবর্তী নিবন্ধমানবতাই পারে বিশ্বকে রাঙাতে