চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল মর্গের পাশের একটি পরিত্যক্ষ জায়গায় এক নারীকে গণধর্ষণের ঘটনায় সাজু দাশ নামের এক আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ১ লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা এ রায় ঘোষণা করেন। এছাড়া এই মামলায় সেকান্দার ও সেলিম নামের অপর দুজনকে খালাস দেয়া হয়েছে। এ সময় সাজু দাশ ও সেলিম আদালত কক্ষে উপস্থিত ছিলেন। সেকান্দার জামিনে গিয়ে ছিলেন পলাতক। খালাস পাওয়া ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনই চমেক হাসপাতালের মর্গসহ বিভিন্ন স্তরে ঘটনার সময় কর্মচারী হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।
ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ১৫ আগষ্ট চমেক মেডিকেল মর্গের পাশের পরিত্যক্ত জায়গায় আঠারো বছর বয়সী ওই নারী গণধর্ষণের শিকার হয়। ঘটনার দুইদিন পর ১৭ আগষ্ট ভিকটিম নিজে বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (৩) ধারায় একটি মামলা করেন। মামলার এজহারে ভিকটিম উল্লেখ করেন, চকবাজারের বাসা থেকে স্বামী তাকে বের করে দিলে আসামিদের কাছ থেকে সহযোগীতা চান। এক পর্যায়ে প্রধান আসামি সাজু দাশ তাকে কেন্টিনে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে মর্গের পাশের পরিত্যক্ত জায়গায় নিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর সেখানে আসে সেকান্দার ও সেলিম। প্রথমে সেলিম ও সেকান্দার এবং পরে সাজু দাশ তাকে পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করেন। ২০১৭ সালের ২৬ ডিসেম্বর এজহারভুক্ত তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট জমা দেন পাঁচলাইশ থানা পুলিশ। পরবর্তীতে আদালত পুলিশের দেওয়া চার্জশিট গ্রহণ করে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
ট্রাইব্যুনালের পিপি খন্দকার আরিফুল আলম আজাদীকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, সন্দেহাতীতভাবে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সাজু দাশ নামের যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে, ধর্ষণের অপরাধের সাথে জড়িত প্রমাণিত হওয়ার পরও সেকান্দার ও সেলিম নামের অপর দুজনকে খালাস দেয়া হয়েছে। আইনগত সাক্ষের অভাবেই তাদেরকে এ খালাস দেন আদালত।