একজনকে হত্যার জন্য গুলি, মারা গেল আরেকজন

নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি | সোমবার , ১৩ মার্চ, ২০২৩ at ৬:০৩ পূর্বাহ্ণ

রামু উপজেলার গর্জনিয়া মাঝিরকাটার বহুল আলোচিত শাহিনুর রহমান শাহীনকে হত্যা চেষ্টার গুলিতে ঘটনাস্থলে প্রাণ গেছে শাহিনের বন্ধু ইরফান মাহমুদের (২১)। নিহত ইরফান (২০) নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের ইসলামপুর এলাকার শফিউল আলম কুতুবের ছেলে। এ ঘটনায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান সন্ত্রাসীদের টার্গেট শাহিন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রামু থানাধীন গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির আইসি মাসুদ রানা ও এলাকাবাসী। তারা বলেন, ঘটনাটি ঘটেছে রোববার সকাল পৌঁনে ১০টায় মাঝিরকাটার বেলতলীছাগলখাইয়া সড়কের জামবাগানের মুছতলী পয়েন্টে।

ঘটনায় নিহতকে উদ্ধার করে পোস্টমর্টেমের জন্য কক্সবাজার পাঠানো হয়েছে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয় ৯টি গুলির খোসা। তাদের ধারণা, সন্ত্রাসীরা কোনও আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটিয়েছে। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, উদ্ধার করা গুলিগুলোর খোসার দৈর্ঘ্য ৩.৯ সেন্টিমিটার। যা ভারী অস্ত্রের।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র মতে, সকালে গোলাগুলির ঘটনার পরপর পুলিশ, বিজিবি, পিবিআই ও সিআইডি কর্মকর্তা যথাক্রমে রামু থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ অরূপ কুমার, সিআইডির ইন্সপেক্টর মিতাশ্রি বড়ুয়ার নেতৃত্বে ৫ সদস্যের টিম, গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ মাসুদ রানা ও এসআই মোজাম্মেল হক ও বিজিবি ছাগলখাইয়া বিওপি ক্যাম্প সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তারা ঘটনাস্থল থেকে ৯টি গুলির খোসা সহ আরো কিছু প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করেছেন।

এদিকে সন্ত্রাসীদের টার্গেট আহত শাহিনুর রহমান শাহীন তৎক্ষণাৎ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তিনি অল্পের জন্যে বেঁচে গেছেন। সন্ত্রাসীরা তাকে লক্ষ্য করে অন্তত ২৩/২৪ রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে। প্রথম ২ রাউন্ড গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেও তৃতীয় নম্বর গুলি আসে তার দিকে। নিজেকে বলি দিয়ে তাকে বাঁচিয়েছে ইরফান। নচেৎ তিনি নিশ্চিত মারা যেতেন। অপর প্রশ্নের জবাবে শাহীন সাংবাদিকদের বলেন, সকাল পৌঁনে ৯ টায় বাড়ি থেকে ছাগলখাইয়া তার রাবার বাগান দেখতে যাওয়ার পথে এ হামলার শিকারে পড়েন। সন্ত্রাসীরা ৮/১০ জন ছিলো । তাদের মধ্যে ১ জনের মুখ খোলা। তাকে তিনি চিনেছেন। বাকীদের চিনেন নি। মনে করা হচ্ছে প্রভাবশালীরা তাকে হত্যার জন্যে তাদেরকে ভাড়ায় এনেছে। শাহীনের দাবি, তার বন্ধুু ইরফান মাহমুদ নাইক্ষ্যংছড়ি সদরের পীরে কামেল শাহ আবদুল গনীর নাতী। সে পাহাড়ের সুন্দর দেখতে নাইক্ষ্যংছড়ির ছাগলখাইয়া এলাকা দেখতে যাচ্ছিলো। তারা দুইটি মোটরসাইকেলে করে যাওয়ার পথে জঙ্গলে ওঁৎপেতে থাকা সন্ত্রাসীরা টার্গেট করে। যারা গুলি করার পরপর পাহাড়ি পথ দিয়ে বাইশারীর দিকে পালিয়ে যায়। তিনি প্রশাসনের কাছে সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. মহিউদ্দিন, গর্জনিয়া ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি হাফেজ আহমদ, সমাজ সেবক মোহাম্মদ আমিন ও যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলাম সহ অর্ধশত নানা পেশার লোক।

এদিকে স্থানীয় সচেতন মহল জানায়, এখন পুরো এলাকা থমথমে। পরপর কয়েকটি ঘটনার পর অনিরাপদ হয়ে গেছে মাঝিরকাটাছাগলখাইয়া এ সড়কটি।

রামু থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ অরূপ কুমার সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে। আসামিদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবুড়ো হয়ে যাচ্ছে ধান
পরবর্তী নিবন্ধসড়কের পাশাপাশি নৌপথেও সার পরিবহনের সিদ্ধান্ত