এই গল্প ক্যান্সারজয়ী আজাদের

| রবিবার , ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৭:২৬ পূর্বাহ্ণ

আজাদী প্রতিবেদন 

বেসরকারি চাকরিজীবী আজাদের ক্যান্সার জয়ের গল্পটা অনেকের মাঝে আশার সঞ্চার করবে। ক্যান্সারের কোনো ‘আনসার’ নেই বলা হলেও আজাদ কিন্তু ঠিকভাবে আনসার পেয়েছেন। ৬ বছরের বেশি সময় ধরে ক্যান্সারজয়ী আজাদ বিয়ে থেকে শুরু করে চাকরি সব করেছেন। সাজিয়েছেন জীবনকে। সন্তানের ভালোবাসায় সিক্তও হন প্রতিদিন। ক্যান্সারজয়ী আজাদ অনেকের জন্য অনুপ্রেরণা বলে মন্তব্য করেছেন তার চিকিৎসক, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতাল ক্যান্সার হাসপাতালের প্রধান ডা. শেফাতুজ্জাহান।

আজাদের পুরো নাম মোহাম্মদ শরীফুল আজাদ। আনোয়ারার হাইলদর ইউনিয়নের কুনিরবিল গ্রামের মৃত আমীন শরিফের পুত্র আজাদ ২০১৬ সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। তার ডান পাশের অণ্ডকোষে ক্যান্সার ধরা পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ পাস করে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি নিয়ে জীবন গোছানোর স্বপ্ন দেখার শুরুতে আজাদের পরিবারের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। তরতাজা যুবক আজাদের ক্যান্সার পুরো পরিবারকে হতাশায় ফেলে দেয়।

আজাদের ক্যান্সার ধরা পড়ে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে। হাসাপাতালের ক্যান্সার বিভাগের চিকিৎসক ডা. শেফাতুজ্জাহান তার চিকিৎসা করতে থাকেন। ২০১৬ সালে চারটি কেমোথেরাপিসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়। সময়মতো রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা শুরু করায় আজাদের ক্যান্সার জয় করা সহজ হয়। টানা দুই বছর নানাভাবে চিকিৎসা দিয়ে আজাদকে পুরোপুরি ক্যান্সারমুক্ত ঘোষণা করেন ডা. শেফাতুজ্জাহান। তবে প্রতি বছর একবার তাকে চেকআপ করাতে বলা হয়েছে। তাছাড়া শরীরে বিশেষ কোনো টিউমার বা ব্যথাজাতীয় অসুবিধা দেখা দিলে সাথে সাথে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন ডা. শেফাতুজ্জাহান।

আজাদ বর্তমানে চেকআপ করান আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে। তিনি গতকাল আজাদীকে বলেন, আগে খুব ছোট্ট পরিসরে হাসপাতাল ছিল। এখন স্বতন্ত্র ক্যান্সার হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। সেবার মানোন্নয়নের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এখন ক্যান্সার জয় আগের চেয়ে অনেক সহজ হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মোহাম্মদ শরীফুল আজাদ একটি বেসরকারি ডেভেলপার কোম্পানিতে প্রজেক্ট ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করেন। ক্যান্সার জয়ের পর বিয়ে করেছেন। তার দুই বছর বয়সী ফুটফুটে একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।

বিজ্ঞানের কাছে নিজের ঋণ স্বীকার করে তিনি বলেন, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের ডা. শেফাতুজ্জাহান যেভাবে আমাকে চিকিৎসাসেবা প্রদান করেছেন তা অনন্য। আমার যে যুদ্ধ তা জয়ে তার ভূমিকা অনেক। পরে পরিবারের চাপে ইন্ডিয়ায় গিয়ে চেকআপ করিয়েছিলাম। সেখানে আমাকে বলা হয়েছে, আপনি খুবই ভালো আছেন।

আজাদ বলেন, আসলেই আমি ভালো আছি। মা, বড় ভাই, ছোট ভাইসহ পরিবার নিয়ে নগরীর খুলশী এলাকায় থাকি। ক্যান্সার হলে ভয় লাগে, তা ঠিক। কিন্তু ভয়ে মরার আগে মরে গেলে হবে না। যুদ্ধ করতে হবে। সময়মতো রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা শুরু করতে পারলে যুদ্ধজয় অনেক সহজ হয়। তাছাড়া এখন চিকিৎসা সুবিধা অনেক বিস্তৃত হয়েছে। চট্টগ্রামে এখন ক্যান্সারের আলাদা হাসপাতাল হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমিয়ানমারের গুলি এসে পড়ল স্টেশনে দাঁড়ানো টেক্সিতে
পরবর্তী নিবন্ধজাতীয় পার্টি ভাঙার পরিস্থিতি দেখছেন না জিএম কাদের