দেড় মাসের মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের পরিকল্পনা থাকলেও বাতিল পরীক্ষাগুলোর মূল্যায়ন কীভাবে হবে– তা নিয়ে সিদ্ধান্তে আসতে পারছেন না কর্মকর্তারা। শিক্ষার্থীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়– সেজন্য বেশকিছু বিকল্প সামনে রেখে এগোনোর কথা বলছেন তারা। খবর বিডিনিউজের।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংস পরিস্থিতিতে জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা স্থগিত করে দেওয়া হয়। সরকার পতনের পর আরেক দফা সহিংসতায় বিভিন্ন কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি প্রশ্নপত্র পুড়ে যাওয়ায় পরীক্ষা আরও পিছিয়ে যায়।
স্থগিত পরীক্ষাগুলো ১১ সেপ্টেম্বর থেকে নেওয়ার নতুন সূচি দেওয়া হলেও গেল মঙ্গলবার অন্তর্বর্তী সরকার তা আরও আরো দুই সপ্তাহ পিছিয়ে অর্ধেক প্রশ্নে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু সেদিন দুপুরেই পাঁচ শতাধিক পরীক্ষার্থী পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে ঢুকে পড়লে সরকার তাদের দাবি মেনে নেয়। এর ফলে শিক্ষা কর্মকর্তাদের সামনে পরীক্ষা হওয়া সাতটি বিষয় ছাড়া অন্য বিষয়গুলোর মূল্যায়ন নিয়ে জটিলতায় পড়তে হচ্ছে। শিক্ষা বোর্ডগুলোর কর্মকর্তারা বুধবার বৈঠকে বসে দেড় মাসের মধ্যে ফল প্রস্তুতের সিদ্ধান্ত নিলেও স্থগিত পরীক্ষার মূল্যায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে পারেননি।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মো. আবুল বাসার বলেন, ‘ফল প্রস্তুত করতে দেড় মাস সময় লাগবে। কিছু খাতা পরীক্ষকদের কাছে পাঠানো বাকী আছে, সেগুলো আমরা পাঠাব।’ এই কর্মকর্তা বলছেন, চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অটোপাসের কোনো সুযোগ নেই। স্থগিত পরীক্ষাগুলোর ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ সুবিধা দেওয়া হবে, যাতে তারা বঞ্চিত না হয়। এবার অটোপাস হবে না। কারণ বাংলা, ইংরেজি দুই পত্র রয়েছে, পদার্থবিজ্ঞানের দুই পত্র, আইসিটি, যুক্তিবিদ্যা পরীক্ষা হয়েছে। এগুলোতে অনেকে খারাপ করে, তো সেক্ষেত্রে অটোপাসের কোনো সুযোগ নেই।
কোভিড মহামারীর সময় উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা নিতে না পারায় আগের ফলাফলের ভিত্তিতে ‘অটোপাস’ দিয়েছিল শেখ হাসিনার সরকার। এবার সে অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো হবে জানিয়ে আবুল বাসার বলেন, সব মিলিয়ে যেভাবে শিক্ষার্থীদের ন্যায়বিচার ন্যস্ত হয়, সেটা আমরা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছি।
স্থগিত পরীক্ষাগুলোর নম্বর দিতে কী কী পদ্ধতি খোঁজা হচ্ছে জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, অনেকগুলো ফ্যাক্টর রয়েছে। শিক্ষার্থীরা সাতটি পরীক্ষা দিয়েছে, এগুলোর একটি গড় নম্বরের ভিত্তিতে নম্বর দেওয়া হতে পারে; সবচেয়ে ভালো নম্বর যেটা, সেটা দেওয়া হতে পারে; সেই ফল খারাপ হলে এসএসসিতে ফলের ভিত্তিতে; আর সেখানেও খারাপ ফল করলে জেএসসির ফলের ভিত্তিতে হতে পারে।
এর মধ্যে কোনটা করব, সেটা পরামর্শক কমিটি সিদ্ধান্ত দেবেন। তবে মূল কথা, সব সুবিধা শিক্ষার্থীদের পক্ষে থাকবে। কেউ যেন বঞ্চিত না হয়, সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই আমরা কাজ করছি। সোজা কথা শিক্ষার্থীরা যেন না ঠকে সে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।